পেনাল্টি যেটা দিয়েছে, এটা কিন্তু পুরো অন্যায়: জিকো

রাকিব হোসেন কোনো চাপে না থাকলেও প্রতিপক্ষের অর্ধ থেকে উঁচু করে ব্যাকপাস বাড়িয়েছিলেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু রাকিবের হিসাবনিকাশ তালগোল পাকানো ছিল। গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে জিকো বল বিপদমুক্ত করার আগেই তা পেয়ে যান নেপালের নবযুগ শ্রেষ্ঠা। অন্য কোনো উপায় না পেয়ে তার শট ডি-বক্সের বাইরে হাত দিয়ে ঠেকানোয় সরাসরি লাল কার্ড দেখতে হয় বাংলাদেশের গোলরক্ষককে। কিন্তু সেই লাল কার্ড নিয়ে কোনো সমস্যা দেখছেন না জিকো। পরবর্তীতে যে পেনাল্টিতে গোল হজম করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ, তার দৃষ্টিতে সেই পেনাল্টিটি পুরো অন্যায়।
বৃহস্পতিবার সাফের আয়োজক মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জিকো বলেছেন, 'এটা একটা দুর্ঘটনা হয়ে গেছে। লাল কার্ড আমাকে দিয়েছে, সেটা সমস্যা না। কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে, পেনাল্টি যেটা দিয়েছে, এটা কিন্তু পুরো অন্যায়। এটা আমাদের পক্ষে ছিল না। একদম বাজে সিদ্ধান্ত।'
আগের দিন বুধবার মালের জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফের অঘোষিত সেমিফাইনালে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে জিকো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তখনও বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১-০ ব্যবধানে। প্রথমার্ধের নবম মিনিটে সুমন রেজার হেড থেকে পাওয়া ওই গোলে ১৬ বছর পর আসরের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। কিন্তু আট মিনিট পর আশাভঙ্গ হয় অস্কার ব্রুজনের শিষ্যদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে বিতর্কিত পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সাদ উদ্দিনের গায়ের সঙ্গে সামান্য গা লাগায় ডি-বক্সে পড়ে যান নেপালের অঞ্জন বিস্তা। তাতেই বেজে ওঠে স্পট-কিকের বাঁশি। এরপর অঞ্জন বদলি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাকে ফাঁকি দিয়ে ম্যাচে সমতা টানেন। শেষ পর্যন্ত ১-১ স্কোরলাইনই থাকায় ফাইনালের টিকিট পায় নেপাল।
প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে ফাইনালে খেলার আশা শেষ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, 'এর আগেও খারাপ লেগেছে। কিন্তু এত খারাপ লাগেনি। কালকে আমরা সবাই মনে করেছি, এক গোলে এগিয়ে আছি, ফাইনালে যাব। সবারই স্বপ্ন ছিল, আমরা ফাইনালে খেলব। আমরা ওইভাবেই প্রস্তুত ছিলাম আর কী। আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি ছিল। তো শেষ মুহূর্তে হয় নাই। সবাই আমরা ভেঙে পড়েছি।'
কীভাবে একে অপরকে সান্ত্বনা দিবেন সেটাও খুঁজে পাচ্ছেন না জিকোরা, 'সান্ত্বনা কীভাবে দিবেন! দেশের প্রতি সবার একটা টান থাকে। সবাই ড্রেসিং রুমে কান্নাকাটি করেছে। কেউ কারও দিকে তাকাতে পারছিল না।'
'মনে হয় দুই ঘণ্টাও ঘুমাতে পারিনি।... ঘুম থেকে শুরু করে আজকেও লাঞ্চের সময় সবাইকে দেখেছি, খাওয়া-দাওয়া করতে পারছে না ঠিকমতো, মন ভালো নেই।'
Comments