ফেরার ম্যাচে লিভারপুলের কাছে হারল মিলান

রিয়াল মাদ্রিদের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে সফল দল এসি মিলান। এ আসরে সাতটি শিরোপা জিতেছে এ ইতালিয়ান ক্লাবটি। সেই দলটি কি-না গত সাত বছর সুযোগ পায়নি এ আসরে। তবে দীর্ঘদিন পর ফেরার ম্যাচটা সুখকর হলো না তাদের জন্য। লিভারপুলের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও হারত হলো দলটিকে।
বুধবার রাতে অ্যানফিল্ডে লিভারপুলের কাছে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হেরেছে এসি মিলান। লিভারপুলের হয়ে একটি করে গোল করেছেন জর্ডান হার্নান্দেজ ও মোহামেদ সালাহ। অপর গোলটি আসে আত্মঘাতী থেকে। মিলানের হয়ে গোলদুটি করেছেন আন্তে রাবিচ ও ব্রাহিম দিয়াজ।
অথচ সবশেষ ২০০৭ সালে এ লিভারপুলকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছিল মিলান। এরপর এবারই প্রথম মুখোমুখি হয় দলটি। তাতে হেরেই গ্রুপ পর্ব শুরু করল দলটি।
ঐতিহ্যের দিক দিয়ে অবশ্য মিলানের চেয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই লিভারপুলও। এ আসরে তাদের চেয়ে মাত্র একটি শিরোপা কম অলরেডদের। ২০০৫ সালে ধ্রুপদী লড়াইয়ে মিলানের চেয়ে তিন গোলে পিছিয়ে থেকেও শিরোপা জিতেছিল তারা।
ঘরের মাঠে এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলতে থাকে লিভারপুল। মাঝমাঠের দখলও ছিল তাদেরই বেশি। ২৩টি শট নেয় তারা। অন্যদিকে মিলান নিতে পারে ৭টি শট।
ম্যাচের শুরুতে প্রায় এক চেটিয়া ফুটবল খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। একের পর এক আক্রমণে নবম মিনিটেই গোল পেয়ে যায় দলটি। সালাহ সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে জোরালো শট নিয়েছিলেন আলেকজান্ডার-আর্নল্ড। তবে তোমোরির পায়ে লেগে দিক বদলে জালে বল গেলে এগিয়ে যায় অলরেডরা।
তবে এর আগে পঞ্চম মিনিটে বাঁ প্রান্তে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দিয়াগো জোটার দারুণ এক কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে তখনই এগিয়ে যেতে পারতো লিভারপুল। অষ্টম মিনিটে কর্নার থেকে নেওয়া মাতিপের নেওয়া হেড ধরে ফেলেন মিলান গোলরক্ষক।
১২তম মিনিটে সালাহর শট তোমোরি ব্লক না করলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো। দুই মিনিট পর পেনাল্টি মিস করে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সহজ নষ্ট করেন সালাহ। রবার্টসনের শটে ডি-বক্সে ইসমাইল বেনাকেরের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে সালাহর পেনাল্টি ঠেকালেও ঠিকভাবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি মিলান গোলরক্ষক। আলগা বল থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন জোটা। তবে এবার ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক।
৩০তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক শট নেন সালাহ। তবে দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন মিলান গোলরক্ষক মাইক মাইগনান। ৪১তম মিনিটে দলীয় প্রচেষ্টায় সমতায় ফেরে মিলান। রাফায়েল লিওর থ্রু পাস থেকে দারুণ এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন রেবিচ।
দুই মিনিট পরই এগিয়ে যায় মিলান। আরও একটি দলীয় প্রচেষ্টার গোল পায় তারা। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ফাঁকায় থাকা থিও হার্নান্দেজকে দারুণ এক থ্রু পাস বাড়ান রেবিচ। তবে হার্নান্দেজের শট একেবারে গোললাইন থেকে ঠেকান রবার্টসন। তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। আলগা বল গোলমুখে পেয়ে আলতো টোকায় জালে পাঠান রিয়াল মাদ্রিদ থেকে ধারে আসা ব্রাহিম দিয়াজ।
বিরতির পরপরই ফের বল জালে পাঠিয়েছিল মিলান। তবে অফসাইডের কারণে সে যাত্রা বেঁচে যায় লিভারপুল। উল্টো ৪৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে দলটি ডিভক ওরিগির সঙ্গে দেওয়া নেওয়া করে গোলরক্ষককে একা পেয়ে আলতো ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন সালাহ। চার মিনিট পর গোল পেতে পারতেন ওরিগিও। তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৬৮তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো লিভারপুল। জোটার শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে পরের মিনিটেই এগিয়ে যায় দলটি। কর্নার থেকে মিলানের এক ডিফেন্ডার হেডে ঠিকভাবে বিপদমুক্ত করতে না পারলে বল পেয়ে যান হেন্ডারসন। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এ ইংলিশ মিডফিল্ডার।
৭২তম মিনিটে আলেকজান্ডার-আর্নল্ডের শট অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস করলে ব্যবধান বাড়েনি। ছয় মিনিট পর থিওর ক্রস থেকে বদলি খেলোয়াড় অলিভার জিরু ঠিকভাবে মাথা ছোঁয়াতে পারলে সমতায় ফিরতে পারতো মিলান। সুযোগ ছিল ৮৭তম মিনিটেও। কর্নার থেকে সিমন কিয়েরের নেওয়া হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকান ইভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন।
Comments