মেসির জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও জিতল পিএসজি

ফরাসি লিগ ওয়ানে এখনও জালের দেখা পাননি লিওনেল মেসি। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অসাধারণ ছন্দে আছেন এ আর্জেন্টাইন। করেছেন জোড়া গোল। দারুণ খেলেছেন কিলিয়ান এমবাপেও। তাতে পিছিয়ে পড়েও আরবি লাইপজিগের বিপক্ষে স্বস্তির জয় মিলেছে পিএসজির।

পার্ক দি প্রিন্সে মঙ্গলবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের 'এ' গ্রুপের ম্যাচে আরবি লাইপজিগকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে পিএসজি। মেসির জোড়া গোল ছাড়া গোল পেয়েছেন এমবাপে। লাইপজিগের হয়ে গোল দুটি করেছেন আন্দ্রে সিলভা ও নর্দি মুকিলে।

ঘরের মাঠে অবশ্য মাঝমাঠের দখল রেখেই খেলতে থাকে পিএসজি। ৬৪ শতাংশ সময় বল দখলে ছিল তাদের। তবে আক্রমণ তদের চেয়ে বেশি করে সফরকারী লাইপজিগ। মোট ১৮টি শট নেয় তারা। জাত ৪টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ১২টি শট নিয়েই ৪টি লক্ষ্যে রাখে স্বাগতিকরা।

চলতি মৌসুমে অসাধারণ ছন্দে আছেন এমবাপে। এদিনও ধরে রেখেছেন নিজের সেই ছন্দ। ম্যাচের শেষ দিকে একটি পেনাল্টি মিস করলেও পুরো ম্যাচে অসাধারণ খেলেছেন তিনি। মেসির গোলদুটোর যোগানদাতাও এ তরুণ।

ম্যাচের শুরু থেকেই এদিন আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে দুই দল। গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা অবশ্য পায় সফরকারী লাইপজিগ। তৃতীয় মিনিটে ক্রিস্টোফার এনকুকুর কাছ থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন কনরাড লেইমার। তবে বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি অস্ট্রিয়ান মিডফিল্ডার। তার শট ঠেকাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে।

চার মিনিট পর আন্দের এরেরার থ্রু বল থেকে দারুণ ভলি নিয়েছিলেন জুলিয়ান ড্রাক্সলার। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে সুযোগ ছিল লাইপজিগেরও। আঞ্জেলিনোর ক্রস থেকে আন্দ্রে সিলভার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

নবম মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। ড্রাক্সলারের কাছ থেকে বল পেয়ে এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে নিখুঁত এক শটে বল জালে পাঠান এমবাপে। তিন মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপে। ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি এ ফরাসি তরুণ।

২৫তম মিনিটে ফ্রিকিক থেকে সৃষ্ট জটলায় সমতায় ফিরতে পারতো লাইপজিগ। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পায় পিএসজি। পরের মিনিটে আন্দ্রে সিলভার শট বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে যায়। তবে দুই মিনিট পর ঠিকই গোল আদায় করে দেয় সফরকারীরা। সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে দারুণ এক ক্রস করেন আঞ্জেলিনো। ফাঁকায় বল পেয়ে আলতো টোকায় বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি সিলভার।  

৪১তম মিনিটে ভেরাত্তির বাড়ানো বলে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন এমবাপে। তবে বল নিয়ন্ত্রণে কিছুটা দেরি করে ফেলায় নষ্ট হয় সে সুযোগ। পরের মিনিটে এর ক্রস থেকে দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে দারুণ এক শট দূরপাল্লার শট নিয়েছিলেন এনকুকু। কিন্তু একেবারে বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া হয় লাইপজিগের। এর পরের মিনিটেও সুযোগ ছিল তাদের। এবার এনকুকুর শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকান পিএসজি গোলরক্ষক নাভাস।

৪৯তম মিনিটে এনকুকুর ফ্রিকিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। আট মিলিত পর কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় সফরকারীরা। পার্ক দি প্রিন্স স্তব্ধ করে দেন মুকিলে। আঞ্জেলিনোর আরও একটি দারুণ ক্রসে দারুণ এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এ ফরাসি মিডফিল্ডার।

১০ মিনিট পরই মেসি ও এমবাপের রসায়নে সমতায় ফেরে পিএসজি। লাইপজিগ ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান এমবাপে। বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে দারুণ এক কাটব্যাক করেন এ তিনি। মেসির শট গোলরক্ষকের গায়ে লেগে বারপোস্টে লেগে ফিরে আসলেও গোলমুখ থেকে ফের শট নিয়ে জালে জড়ান তিনি। 

৭৪তম মিনিটে মেসির সফল স্পটকিকে এগিয়ে যায় পিএসজি। পানেনকা কিকে বল জালে পাঠান এ আর্জেন্টাইন। ডি-বক্সে এমবাপেকে ফাউল করায় পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তিন মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারতো লাইপজিগ। তাদের দুই দফা জোড়ালো আক্রমণ ঠেকান পিএসজি ডিফেন্ডাররা।

এরপরও সমতায় ফিরতে বেশ কিছু সুযোগ সৃষ্টি করেছিল জার্মান দলটি। তবে গোলের দেখা পায়নি। উল্টো যোগ করা সময়ে ডি-বক্সে আশরাফ হাকিমিকে ফাউল করলে পেনাল্টি পেয়ে যায় পিএসজি। ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগটি নষ্ট করেন এমবাপে। তার শট বারপোস্টের উপর দিয়ে চিলে যায়।

এ জয়ে ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এলো পিএসজি। এ গ্রুপের অপর ম্যাচে ক্লাব ব্রুজকে ৫-১ গোলের ব্যবধানে উড়িয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। তবে পিএসজির জয়ে দ্বিতীয় স্থানে চলে গেছে দলটি। তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরে তালিকার তলানিতে আছে লাইপজিগ।

Comments

The Daily Star  | English

Polytechnic students issue 48-hr ultimatum over six-point demand

Threaten a long march to Dhaka if govt doesn't respond to demands

17m ago