ম্যান সিটির কোচ গার্দিওলার চোখে তার শিষ্যরা 'কিংবদন্তি'

শেষ বাঁশি বাজার পর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি পেপ গার্দিওলা। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে জিতে তার দল ম্যানচেস্টার সিটি চ্যাম্পিয়ন হয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। উল্লাস ও উদযাপনের আবহে এই স্প্যানিশ কোচ ভাসেন চোখের জলে। পরে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো শিষ্যদের 'কিংবদন্তি' তকমা দেন তিনি।
রোববার মৌসুমের শেষদিনে ফয়সালা হয় ২০২১-২২ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের। খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া ম্যান সিটি ঘরের মাঠে অ্যাস্টন ভিলাকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ধরে রাখে শিরোপা। গার্দিওলার অধীনে সবশেষ পাঁচ মৌসুমে চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ নেয় তারা।
ম্যাটি ক্যাশ ও ফিলিপ কৌতিনহোর লক্ষ্যভেদে ম্যাচের ৬৯ মিনিটের মধ্যে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল সিটিজেনরা। তাতে দীর্ঘ নয় মাসের প্রচেষ্টা বিফলে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছিল তাদের। কিন্তু রোমাঞ্চের জন্ম দিয়ে দোর্দণ্ড প্রতাপে ফিরে আসে স্বাগতিকরা। ৭৬ থেকে ৮১- এই পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে তারা ছিনিয়ে নেয় শিরোপা। বীরোচিত নৈপুণ্যে জোড়া গোল করেন বদলি নামা ইল্কাই গুন্দোগান। মাঝে ভিলার জালে বল পাঠান রদ্রি।

নাটকীয় ৯০ মিনিটের পর ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই স্পোর্টসের কাছে শিষ্যদের প্রশংসায় মাতেন গার্দিওলা, 'অসাধারণ। আমরা, মানে এই ছেলেরা কিংবদন্তি। যখন আপনি এই দেশে পাঁচ বছরের মধ্যে চারবার প্রিমিয়ার লিগ জেতেন, এর পেছনে কারণ হলো এই ছেলেরা স্পেশাল।'
আগের মৌসুমে শিরোপা ঘরে তোলার জন্য এত কাঠখড় পোড়াতে হয়নি ম্যান সিটিকে। বেশ কয়েক ম্যাচ হাতে রেখেই তারা লিগের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছিল। তবে উপলক্ষটা জুতসই ক্ষণে আসেনি। লেস্টার সিটির কাছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড হেরে যাওয়ায় শিরোপার ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। তাছাড়া, করোনাভাইরাসের কারণে মাঠে দর্শক না থাকায় সিটির উদযাপন হয়েছিল গড়পড়তা।
এবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ভক্ত-সমর্থকদের সামনে সেরার স্মারক উঁচিয়ে ধরতে পেরে বেজায় খুশি গার্দিওলা, 'প্রথমবার শিরোপা জিতেছিলাম ১০০ পয়েন্ট পেয়ে। অনেক ব্যবধানে এগিয়ে ছিলাম আমরা। দ্বিতীয়বার ব্রাইটনে গিয়ে। ঘরের মাঠে খেলিনি আমরা। তৃতীয়বার দর্শক ছিল না গ্যালারিতে। এবার আমাদের মাঠে ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জেতাটা সেরা ব্যাপার।'

ম্যাচের মাত্র ১৫ মিনিট বাকি থাকতে শিরোপার স্বপ্ন প্রায় মুছে গিয়েছিল সিটির। তবে গুন্দোগানের হেড জাল খুঁজে নেওয়ার পরই উদ্যম ফিরে পায় দলটি। দুই মিনিটের মধ্যে রদ্রির দূরপাল্লার নিচু শট ভিলার গোলরক্ষককে ফাঁকি দিলে লড়াইয়ে ফেরে সমতা। তিন মিনিট পর আলতো টোকায় গুন্দোগান ফের গোল করলে কেঁপে ওঠে গোটা ইতিহাদ।
হোঁচট খাওয়ার দ্বারপ্রান্তে থাকলেও রাজকীয় প্রত্যাবর্তনের আত্মবিশ্বাস তাদের ছিল বলে জানান গার্দিওলা, 'যেই মুহূর্তে আমরা প্রথম গোল করলাম এবং এরপর সমতায় ফিরলাম, তখন থেকেই আমাদের মনে হচ্ছিল যে আমরা জয়সূচক গোলটা পেয়ে যাব।'
Comments