রিয়ালকে সেমি-ফাইনালে তুললেন সেই বেনজেমাই

প্রথম লেগে চেলসির মাঠ থেকে অসাধারণ এক হ্যাটট্রিক তুলে রিয়াল মাদ্রিদকে সেমি-ফাইনালে পথে এগিয়ে রেখেছিলেন করিম বেনজেমা। দ্বিতীয় লেগে যখন লড়াইটা জমজমাট তখন দুর্দান্ত এক হেডে দলকে ফের (দুই লেগ মিলিয়ে) এগিয়ে দেন এ ফরাসি। তাতে চেলসির বিপক্ষে হারলেও শেষ হাসি হেসেছে লস ব্লাঙ্কোসরাই। সেমি-ফাইনালের টিকেট কেটেছে দলটি।

মঙ্গলবার রাতে ঘরের মাঠে চেলসির কাছে ৩-২ গোলের ব্যবধানে হেরেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে প্রথম লেগে ৩-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় কার্যত জয় হয় স্বাগতিকদেরই। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে শেষ চারে নাম লেখায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে সফল দলটি।

এদিন প্রথম বারের মতো রিয়ালের মাঠ বার্নাব্যুতে খেলে নেমেছিল চেলসি। আর প্রথম ম্যাচেই জয় মিলে তাদের। কিন্তু তারপরও মাথা নত করে মাঠ ছাড়তে হয় দলটিকে। দলের ফরোয়ার্ডদের একের পর মিসে মূলত আসর থেকে বিদায় নিতে হয় দলটিকে।

মূল সময়ের শেষ মুহূর্তে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন বদলি খেলোয়াড় ক্রিস্তিয়ান পুলিসিক। কিন্তু মারেন বাইরে। তেমনি অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকেও ফাঁকায় পেয়ে যান আরেক বদলি খেলোয়াড় জর্জিনহো। তার শটও হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। এমন অনেক লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের কারণে কোয়ার্টার ফাইনালেই থামে গত আসরের চ্যাম্পিয়নদের যাত্রা।

অথচ ৫৬ শতাংশ বলের দখল রেখে ২৮টি শট নিয়েছিল চেলসি। যার মধ্যে মাত্র ৭টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। অন্যদিকে ১০টি শটের ৪টি লক্ষ্যে রেখে ২টি গোল আদায় করে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে রিয়াল।

এদিন ম্যাচের ১৫তম মিনিটেই এগিয়ে যায় চেলসি। মাঝ মাঠ থেকে সতীর্থের পাস পেয়ে টিম ভের্নারের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান রুবেন লফটাস-চেক। ওয়ান টাচে ডি-বক্সে মেসন মাউন্টের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান এ জার্মান ফরোয়ার্ড। ডি-বক্সে ঢুকে জোরালো শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি মাউন্টের। তবে তখন দুই লেগ মিলিয়ে এক গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে সফরকারীরা।

সেই ঘাটতিটা অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পূরণ করে চেলসি। ব্যবধান দ্বিগুণ করে দুই লেগ মিলিয়ে সমতায় ফেরে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। মাউন্টের নেওয়া কর্নার কিক থেকে অসাধারণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন রুডিগার। তবে এ ক্ষেত্রে নিজেদের কিছুটা ভাগ্যবান বলতেই পারেন সফরকারীরা। রিস জেমসের নেওয়া শট রিয়ালের কোনো খেলোয়াড়দের গায়ে না লেগে বাইরে গেলেও কর্নারের বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি। সেই কর্নার থেকেই গোল আদায় করে নেয় চেলসি।

তবে ৬২তম মিনিটে আর ভাগ্য সঙ্গে থাকেনি। রিয়ালের জালে বল পাঠিয়েও দুর্ভাগা সফরকারীরা। কান্তের পাস থেকে অসাধারণ এক শট রিয়ালের জালে বল জড়ান মার্কোস আলনসো। তবে প্রথম দফায় তার নেওয়া শট নাচোর গায়ে লেগে ফিরে আসার সময় হাতে লাগলে ভিএআরে যাচাইয়ের পর বাতিল হয় গোলটি।

তবে ৭৫তম মিনিটে ঠিকই বার্নাব্যু স্তব্ধ করে দেন ভার্নার। আলনসোর কাছ থেকে বল পেয়ে এ জার্মান তারকার উদ্দেশ্যে বল বাড়ান কোকাভিচ। বল ধরে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে শট নেন ভার্নার। তবে গোলরক্ষক থিবো কোর্তুয়ার হাতে লেগে দিক বদলে বল প্রবেশ করে জালে।

৮০তম মিনিটে লড়াইয়ে ফিরে রিয়াল। তাদের ত্রাতা বদলি খেলোয়াড় রদ্রিগো। লুকা মদ্রিচের নিখুঁত এক ক্রস থেকে ডি-বক্সে ঢুকে অসাধারণ এক শট লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান তরুণ। তবে ম্যাচের শেষ মিনিটে দুটি দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন পুলিসিক। যার একটি তো সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। 

অতিরিক্ত সময়েও বেশ কিছু সহজ সুযোগ পান পুলিসিক। পান তার সতীর্থরাও। কিন্তু সবাই ব্যর্থ। উল্টো ৯৬তম মিনিটে বুলেট গতির হেডে ব্যবধান কমান বেনজেমা। তাতে দুই লেগ মিলে এগিয়ে যায় রিয়াল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের নিখুঁত এক চিপ থেকে একেবারে ফাঁকায় থাকা এ ফরাসি তারকার হেড জালে প্রবেশ করলে উল্লাসে ফেটে পড়ে স্বাগতিকরা।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago