সাত গোলের রোমাঞ্চে রিয়ালকে হারাল সিটি
ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিটেই দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। পরে ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচে ফেরে রিয়াল। দ্বিতীয়ার্ধে তো বাঘে মহিষে লড়াই। সিটি একবার ব্যবধান বাড়ায় তো কিছুক্ষণ পর তা কমায় রিয়াল মাদ্রিদ। ফলে সাত গোলের রোমাঞ্চকর এক লড়াই শেষে জয় তুলে নিয়েছে সিটিজেনরা।
মঙ্গলবার ইতিহাদ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনাল ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-৩ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। সিটির হয়ে গোল পেয়েছেন কেভিন ডি ব্রুইনা, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, ফিল ফোডেন ও বের্নার্দো সিলভা। রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল পেয়েছেন করিম বেনজেমা। অপর গোলটি করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
তবে এদিন বেশ বড় ব্যবধানেই জিততে পারতো সিটি। একের পর এক মিসের মহড়ায় শেষ পর্যন্ত নুন্যতম ব্যবধানে জিততে হয় তাদের। তাতে দারুণ স্বস্তি মিলে রিয়ালের। এর আগে শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে প্রত্যাবর্তনের অসাধারণ গল্প লিখেই সেমি-ফাইনালে নাম লেখায় দলটি।
আসরে এবার দ্বিতীয় রাউন্ডে পিএসজির বিপক্ষে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও করিম বেনজেমার হ্যাটট্রিকে জয় পায় তারাই। শেষ আটের ম্যাচে চেলসির কাছে এক পর্যায়ে এক গোলে পিছিয়েও থেকেও ব্যবধান হয়ে দাঁড়ান সেই বেনজেমা। এদিনও জোড়া গোল করে দলকে লড়াইয়ে টিকিয়ে রাখেন এ ফরাসি।
এদিন ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় সিটি। দারুণ এক হেডে দলকে এগিয়ে দেন ডি ব্রুইনা। অবশ্য এ গোলে দারুণ অবদান রয়েছে রিয়াদ মাহরেজের। রুবেন দিয়াসের কাছ থেকে বল পেয়ে একাধিক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে নিখুঁত এক ক্রস করেন এ আলজেরিয়ান ফুটবলার। বাকি কাজ সহজেই সারেন ডি ব্রুইনা।
অবশ্য ম্যাচের একাদশ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে সিটি। বাঁ প্রান্তে ফিল ফোডেনের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সে নিখুঁত এক ক্রস দেন ডি ব্রুইনা। অসাধারণ দক্ষতায় রিয়াল ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবাকে বোকা বানিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ এক প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান জেসুস।
৩৩তম মিনিটে ব্যবধান কমায় রিয়াল। বাঁ প্রান্ত থেকে ফেরলান্দ মেন্দির ক্রসে দুর্দান্ত এক সাইড ভলিতে বল জালে পাঠান বেনজেমা। চলতি আসরে এটা তার ১৩তম গোল। তবে এর মিনিট তিনেক আগে আলাবার হেড লক্ষ্যে থাকলে আগেই ব্যবধান কমাতে পারতো দলটি।
৫৩তম ফের ব্যবধান বাড়ায় সিটি। ডান প্রান্তে ভিনিসিয়ুস বল হারালে তা কেড়ে নিয়ে ফের্নান্দিনহো এগিয়ে দারুণ এক ক্রস করেন ডি-বক্সে। লাফিয়ে উঠে দারুণ এক হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ফোডেন। দুই মিনিট পরই ব্যবধান কমায় রিয়াল। এবার ফের্নান্দিনহোকে সেই ভিনিসিয়ুস বোকা বানিয়ে ফাঁকায় বল নিয়ে এগিয়ে দুরন্ত গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে পাঠান।
৭৪তম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে স্বাগতিকদের আবার এগিয়ে দেন সিলভা। ডি বক্সের সামনে জিনচেঙ্কো রিয়ালের এক খেলোয়াড়ের বাধার মুখে বল হারালে পেয়ে যান এ পর্তুগিজ তারকা। আলগা বল ধরে দূরপাল্লার অসাধারণ এক শট লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
আট মিনিট পর স্পটকিক থেকে ব্যবধান কমান বেনজেমা। অসাধারণ এক পানেনকা শটে বল জালে পাঠান। ডি-বক্সের মধ্যে আইমেরিক লাপোর্তার হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।
এদিন পুরো ম্যাচে দারুণ খেললেও মাহরেজের জন্য জয়ের ব্যবধানটা বড় করতে পারেনি স্বাগতিকরা। ২৬তম মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক মিস করেন। ফাঁকায় বল পেয়েও সাইডের পোস্ট কাঁপান। প্রথমার্ধের শেষ দিকে ফাঁকায় পেয়েও নিজে শট না নিয়ে পাস দিতে গিয়ে নষ্ট করেন সুবর্ণ এক সুযোগ। বিরতির পরপরই একেবারে ফাঁকায় থেকে বল লাগান সাইডপোস্টে। ৭৬তম মিনিটে ফের গোলরক্ষককে একা পেয়ে বাইরে মারেন তিনি।
অবশ্য দায় রয়েছে ফোডেনেরও। ২৯তম মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও বাইরে মারেন এ তরুণ। সুযোগ নষ্ট করেন আরও দুটি। ৪৭তম মিনিটে গোলমুখে আলগা বল পেয়ে মারেন দানি কার্ভাহাল বরাবর। ৬৮তম মিনিটেও বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি। ম্যাচের শেষ দিকে মাহরেজের দুটি দারুণ থ্রু পাস থেকে দুইবারই অল্পের জন্য পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন দিয়াস। অন্যথায় ব্যবধান বাড়তেও পারতো।
Comments