বাটলারের সেঞ্চুরিতে সেমিতে এক পা ইংল্যান্ডের

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরিটা যেন হয়েও হচ্ছিল না। বেশ কয়েকবারই কাছাকাছি গেলেও তিন অঙ্কের স্বাদ মিলেনি জস বাটলারের। তবে উৎসবের উপলক্ষটা রাঙাতে বেছে নিলেন বড় মঞ্চকেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই সেঞ্চুরি তুলে ইংল্যান্ডকে পাইয়ে দিলেন লড়াকু পুঁজি। আর তাতেই ভর করে আরও একটি দারুণ জয় তুলে সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ২৬ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান করে ইংল্যান্ড। জবাবে ৬ বল বাকি থাকতেই ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা।
আর ইংল্যান্ডের এ জয়ে কঠিন হলেও টিকে রইল বাংলাদেশের আশা। শেষ দুই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয় পেলে এবং অপর ম্যাচগুলোর ফলাফল পক্ষে এলে সেমি-ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা থাকবে টাইগারদের।
এদিন ইংল্যান্ডের জয়ের মূলনায়কই বাটলার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে খেলেন ১০১ রানের ইনিংস। ৬৭ বলে ইনিংসটি ৬টি করে চার ও ছক্কায় সাজান এ ওপেনার। তবে বাজে সময় কাটিয়ে ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছেন অধিনায়ক ইয়ন মরগান। বাটলারকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে ৩৬ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪০ রান করেন অধিনায়ক।
অবশ্য ব্যক্তিগত ৯৩ রানে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন বাটলার। পাথুম নিসাঙ্কা যদি ক্যাচটা লুফে নিতে পারতেন তাহলে হয়তো এদিনও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হতো তাকে। আর জীবন পেয়ে তা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন। ইনিংসের শেষ বলে দারুণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন এ ইংলিশ ব্যাটার।
অথচ ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার ঘূর্ণিতে দলীয় ৩৫ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ছিল ইংল্যান্ড। এরপর মরগানকে নিয়ে দলের হাল ধরেন বাটলার। ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি রানের গতিও সচল রাখেন তারা। গড়েন ১১২ রানের অসাধারণ এক জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি মিলে যায় ইংলিশদের।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ২১ রানের খরচায় ৩টি উইকেট তুলে নেন হাসারাঙ্গা। তাতে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তার উইকেট সংখ্যা হলো ৫০টি। এ সংস্করণে পঞ্চম দ্রুততম ৫০ উইকেট শিকারি এ লঙ্কান স্পিনার। ৩২ ম্যাচে এ কীর্তি গড়েন তিনি। সবচেয়ে দ্রুততম ৫০ উইকেট শিকারি তার স্বদেশী অজান্থা মেন্ডিস। ২৬ বলেই এ মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন তিনি।
এদিন শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা শুরু থেকেই দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন। অন্যদিকে উল্টো চিত্র ছিল পেসারদের। দুই স্পিনার আট ওভার বল করে রান দিয়েছেন মাত্র ৩৪। ওভার প্রতি ৪.২৫ রান।অন্যদিকে পেসাররা ১২ ওভার করে রান দিয়েছেন ১২৮টি। ওভার প্রতি খরচ হয়েছে ১০৬৭ রান। আরও একজন স্পিনার থাকলেও হয়তো ফলাফলটা ভিন্নও হতে পারতো।
লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই অহেতুক এক উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। স্কয়ার লেগে ঠেলে রান নিতে গিয়ে রানআউট হন নিসাঙ্কা। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। সেট হয়েও উইকেট বিলিয়ে আসছিলেন লঙ্কান ব্যাটাররা। ফলে দলীয় ৭৬ রানেই প্রথম সারীর পাঁচ উইকেট হারায় দলটি।
তবে ষষ্ঠ উইকেটে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ৫৩ রানের জুটি গড়ে ভালো কিছু ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তারা। কিন্তু সীমানায় হাসারাঙ্গার ক্যাচ দারুণভাবে ধরেছিলেন জেসন রয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারায় ছুঁড়ে দেন স্যাম বিলিংসের কাছে। তাতেই ভাঙে এ জুটি। এরপর দারুণ থ্রোতে অধিনায়ক শানাকাকে ফেরান বাটলার। ফলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় শ্রীলঙ্কা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন হাসারাঙ্গা। ২১ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৬ রান করে করেন শানাকা ও ভানুকা রাজাপাকসা। ইংল্যান্ডের পক্ষে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন আদিল রশিদ, মইন আলী ও ক্রিস জর্ডান।
Comments