অলিম্পিক পদকের মূল্য কতো?

একটি অলিম্পিক পদক। বিশ্বের হাজারো হাজারো অ্যাথলেটের স্বপ্ন। 'গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে' কোনো মতে একটি পদক পেয়ে নিজের নাম সোনার অক্ষরে লিখিয়ে রাখতে চান তারা। সে পদকের মূল্য কি বাজারমূল্যে মাপা যায়? প্রত্যেক অ্যাথলেটের জন্য এ পদক যে অমূল্য। হোক তা ব্রোঞ্জও।

২০০৪ অ্যাথেন্স অলিম্পিকে একটি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন সাবেক ব্রিটিশ হেপটাথলেট কেলি সোথার্ন। তাও ৪X৪০০ মিটার রিলেতে। সে পদক বিক্রির প্রসঙ্গে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তার সারা জীবনের অমূল্য এ সম্পদ অলিম্পিকের এ পদক। কোনো কিছুর বিনিময়েই এটা বিক্রি করবেন না তিনি, 'আমি আমার পদক কখনোই বিক্রি করব না। এটা আমার কাছে অনেক কিছু।' সোথার্নের এক বাক্যেই তো বোঝা যায় অলিম্পিকের পদকের কাছে কাড়িকাড়ি টাকাও ভিত্তিহীন। এ বিরল সম্মানের কাছে সবকিছুই গৌণ।

কিন্তু তারপরও এ পদকের একটা বাজারমূল্য তো আছেই। তবে প্রতিটি আসরে অবশ্য এর ওজন ভিন্ন হয়ে থাকে। যা কারণে মূল্যও হয় ভিন্ন। রিও অলিম্পিকের চেয়ে টোকিও অলিম্পিকের পদক কিছুটা ভারি। যার ডিজাইন করেছেন জাপানি দিজাইনার জুনিচি কাওয়ানিশি। প্রতিটি স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ পদক ব্যাস ৮৫ মিলিমিটার এবং ব্যাপ্তি ৭.৭ মিলিমিটার থেকে ১২.১ মিলিমিটার পর্যন্ত।

খাঁটি রূপার উপর গোল-প্লেটের তৈরি প্রতিটি স্বর্ণ পদকের ওজন ৫৫৬ গ্রাম। যেখানে সোনার পরিমাণ মাত্র ৬ গ্রাম। এর বাজার মূল্য ৮০০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় হয় ৬৭ হাজার ৯১২ টাকা। সাম্প্রতিক সময়ে এটাই সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ অলিম্পিকের স্বর্ণ পদকের মূল্য ছিল ৭০৮ ডলার। এর আগে রিও অলিম্পিকেও সোনার পরিমাণ ছিল ৬ গ্রামই। তবে পদকের মোট ওজন কিছুটা কম ছিল (৪৯৪ গ্রাম)।

তবে রৌপ্য পদকে পুরোটাই খাঁটি রুপা। যার ওজন ৫৫০ গ্রাম। বাজারমূল্য ৪৫০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় হয় ৩৮ হাজার ২০১। ব্রোঞ্জ পদকের ওজন প্রায় ৪৫০ গ্রাম। যা তৈরি হয়েছে প্রায় ৯৫ শতাংশ তামা ও ৫ শতাংশ দস্তা ও সামান্য পরিমাণ টিন দিয়ে। এর মূল্য ৫ ডলারের কাছাকাছি। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২৪ টাকা।

তবে কেউ নিজের পদক বিক্রি করলে যে কেবল এই পরিমাণ অর্থ পাবেন তা নয়। গত মাসেই ১৮৯৬ সালের একটি স্বর্ণ পদক নিলামে বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। গত বছর লন্ডন অলিম্পিকে পাওয়া স্বর্ণ পদক ৭৩ হাজার ২০০ ডলারে বিক্রি করেন কিউবান শুটার। আর লং জাম্পে সিডনি অলিম্পিকে পাওয়া স্বর্ণ পদক ৭১ হাজার ৩৩৫ ডলারে বিক্রি করেন তারই স্বদেশী ইভান পেদ্রোসো।

এ সব মূল্যকে ছাপিয়ে যায় জেসে ওয়েনের ১৯৩৬ সালের বার্লিন অলিম্পিকে পাওয়া স্বর্ণ পদক। ২০১৩ সালে নিলামে তিনি ১.৪৬ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা। 

তবে অলিম্পিকে এক সময় পুরো স্বর্ণ দিয়েই তৈরি হতো অলিম্পিকের পদক। ১৯১২ সালের স্টকহোম অলিম্পিক পর্যন্ত আক্ষরিক অর্থেই সোনার মেডেল পেয়েছিলেন বিজয়ীরা। মাঝে ১৯০৪ সালের সেন্ট লুইস অলিম্পিকে মেডেলের জায়গায় দেওয়া হয়েছিল সোনার ট্রফি। তবে বিশ্বব্যাপী সোনার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে খরচের পরিমাণ আকাশ ছোঁয়ায় নামমাত্র সোনায় পদক তৈরি শুরু করে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

6h ago