ব্যাটিংয়ে নেই টি-টোয়েন্টির ঝাঁজ, বাংলাদেশের বড় হার

ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ রানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
ছবি: সংগৃহীত

লক্ষ্য তাড়ায় মাঝপথে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৭৭ রান। জয়ের জন্য সেসময় চাই ৬০ বলে আরও ১১৭ রান। হাতে জমা ৭ উইকেট। থিতু হয়ে ক্রিজে থাকা সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেনের পর উইকেটে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও শেখ মেহেদী হাসান।

বলের সঙ্গে রানের চাহিদার পার্থক্য বিস্তর হলেও সংস্করণটা টি-টোয়েন্টি বলে আশাবাদী হওয়ার প্রয়াস থাকে। এমন অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নেওয়ার আছে বহু নজির। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে আদৌ কোনো ইতিবাচক ভাবনা তখন দোলা দিয়েছিল কি? প্রশ্নটিতে সম্ভবত 'না' উত্তর মিলেছে। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণ টেস্টের মতো ক্ষুদ্রতম সংস্করণ টি-টোয়েন্টির ঘরানার সঙ্গেও যে এখনও মানিয়ে নেওয়া হয়নি টাইগারদের!

ওই ৬০ বলে বাংলাদেশ আরও ৩ উইকেট খুইয়ে যোগ করতে পারে আর ৮১ রান। অর্থাৎ পরিকল্পনাহীন ব্যাটিংয়ে অবস্থার খুব বেশি হেরফের হয়নি। রানের চাকায় লাগেনি দম। ফলে রোববার ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ রানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের তোলা ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের জবাবে পুরো ওভার খেলে বাংলাদেশ করেছে ৬ উইকেটে ১৫৮ রান। তিন ম্যাচের সিরিজে তারা পিছিয়ে পড়েছে ১-০ ব্যবধানে। আগের দিন একই ভেন্যুতে প্রথম টি-টোয়েন্টি ভেসে যায় বৃষ্টিতে।

যে উইকেটে ক্যারিবিয়ানরা ব্যাটিং তাণ্ডব চালায়, সেই উইকেটে ধুঁকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে বাঁহাতি তারকা সাকিব আল হাসান ছিলেন ব্যাট হাতে উজ্জ্বল। তৃতীয় ওভারে দলীয় ২৩ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর চতুর্থ উইকেটে আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৪৪ বলে ৫৫ ও ষষ্ঠ উইকেটে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে ২৮ বলে ৫৩ রানের ভালো দুটি জুটি গড়েন তিনি। তবে সাকিব যতক্ষণে হাত খুলে মারমুখী হন, ততক্ষণে লড়াই থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ২০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করা সাকিব অপরাজিত থাকেন ৬৮ রানে। ৫২ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৫ চার ও ৩ ছক্কা। শেষ পর্যন্ত তার স্ট্রাইক রেট ১৩০.৭৬ হলেও এক পর্যায়ে, ৪২ বলে তার সংগ্রহ ছিল কেবল ৪৩ রান। মুখোমুখি হওয়া পরের ৯ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারে তিনি যোগ করেন ২৫ রান।

একই লড়াই করা সাকিব বাদে রান পান কেবল আফিফ। ২৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় তার ৩৪ রানের ইনিংস থামে উইকেটরক্ষক পুরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে। পেসার রোমারিও শেফার্ডকে ফাইন লেগে সরে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন তিনি।

শুরুতেই দুই ওপেনারের বিদায়ে দিশা হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে পরপর দুই বলে বিদায় নেন লিটন দাস ও এনামুল হক বিজয়। পেসার ওবেড ম্যাককয়কে ফ্লিক করতে গিয়ে শামার ব্রুকসের তালুবন্দি হন লিটন। ৪ বলে তার রান ৫। ফুটওয়ার্ক ছাড়া ড্রাইভের চেষ্টায় ইনসাইড এজে বোল্ড হন বিজয়। ৩ রান করতে তিনিও খেলেন ৪ বল।

দলের বিপদ বাড়িয়ে সাজঘরের পথ ধরেন মাহমুদউল্লাহ। ওডিন স্মিথকে চার-ছক্কা হাঁকানোর পর ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মারতে গিয়ে মিড অফে ম্যাককয়ের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৭ বলে তার সংগ্রহ ১১ রান। এরপর সাকিব ও আফিফের জুটিতে দেখা মেলে প্রতিরোধের।

আফিফের বিদায়ের পর সোহান আউট হন ছক্কা মারতে গিয়ে। একের পর এক বল খেলেও বাউন্ডারি না পাওয়ায় মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সীমানার কাছে স্পিনার আকিল হোসেনের শিকার হন সোহান। ১৩ বল খেলে মাত্র ৭ রান করেন তিনি। শেফার্ডের দ্বিতীয় শিকার হওয়া মোসাদ্দেক ১৫ রান করেন ১১ বলে। শেষ ওভারে নামা শেখ মেহেদী অপরাজিত থাকেন ২ বলে ৫ রানে। ফলে সাকিবের ফিফটি কেবল হারের ব্যবধানই কমায় বাংলাদেশের।

Comments

The Daily Star  | English
Civil society in Bangladesh

Our civil society needs to do more to challenge power structures

Over the last year, human rights defenders, demonstrators, and dissenters have been met with harassment, physical aggression, detainment, and maltreatment by the authorities.

9h ago