ছোটদের অ্যালার্জি

ছোটদের বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ হয়ে থাকে। এর মধ্যে অ্যালার্জিও দেখা যায়।

খাবারে অ্যালার্জি

নানা সময়ে খাবারের জিনিস থেকে বাচ্চাদের অ্যালার্জি দেখা যায়। অনেক বাবা-মাকেই দেখা যায় সন্তানের শরীরে কোনোরকম চুলকানি হলেই সঙ্গে সঙ্গে ডিম, চিংড়ি মাছ, বেগুন ইত্যাদি খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। আবার সঙ্গে কোনো অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খাইয়ে দেন। ফলে সাময়িকভাবে চুলকানি বন্ধ হয়ে যায় এবং সবার ধারণা অ্যালার্জি আছে তাই নির্দিষ্ট এই খাবারগুলো বাদ দেওয়াই ভালো।

সাধারণত খাবার থেকে অ্যালার্জি হলে বারবার পেট খারাপ হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। সাধারণত ডিম, সয়া মিল্ক, গরুর দুধ, সি-ফিশ থেকে ছোট বাচ্চাদের অ্যালার্জি হয়। তবে কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে সেটা জানার সহজ উপায় হলো প্রতিদিন খাবারের মেন্যুতে সন্দেহভাজন খাবার থেকে একটি করে রাখা এবং তা বাচ্চাকে খাওয়ানো। এভাবে তিন দিন ধরে দেখতে হবে অ্যালার্জির সৃষ্টি হচ্ছে কি না। যদি না হয় তাহলে বুঝতে হবে ওই নির্দিষ্ট খাবার থেকে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

এটা অনেকের ধারণার বাইরে যে, দুধ ও অন্যান্য মিল্ক প্রডাক্ট থেকেও বাচ্চাদের অ্যালার্জি হতে পারে। বাচ্চা মানেই দুধ খাওয়াতে হবে অ্যালার্জি হলেও, এটা ঠিক নয়। বরং দুধের তৈরি খাবার খাওয়াতে পারেন। এখন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেও জানা যায় কোন ধরনের খাবারে আপনার অ্যালার্জি। সেক্ষেত্রে সে ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।

পোকা-মাকড়ে অ্যালার্জি

পোকা-মাকড় ভীতি ছোটদের মধ্যে কম-বেশি দেখা যায়। যেসব বাচ্চার ক্ষেত্রে ক্রমাগত অ্যালার্জির প্রবণতা দেখা যায়, তারা সব থেকে বেশি পোকা-মাকড়ের অ্যালার্জি থেকে প্রভাবিত হয়। বাচ্চাদের হাত ও পায়ের খোলা অংশে ছোট ছোট লাল লাল গুঁটির মতো দেখা যায়। এগুলো খুব চুলকায় এবং সেরে যাওয়ার পর কালো কালো ছোপ থেকে যায়। এ অ্যালার্জি সাধারণত ২-৩ বছর পর্যন্ত চলে। অনেক বাচ্চার ক্ষেত্রে ৫ বছর পর্যন্ত এই অ্যালার্জির প্রভাব থাকে। এই ধরনের অ্যালার্জি হলে বাচ্চাদের টানা ৬-১২ মাস বা অনেক সময় ২ বছর পর্যন্ত মেট্রিজিন, হাইড্রক্সিজিন বা কিটোটিফেন জাতীয় অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন।

ধুলো এবং পোষা প্রাণী থেকে অ্যালার্জি

যেসব শিশু বারবার অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে, তাদের ধুলো-ময়লা বা পোষা প্রাণী থেকে অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ধুলোর মধ্যে হাউজ ডাস্ট সাইট বলে একধরনের জীবাণু থাকে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে শ্বাসনালীতে পৌঁছে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এর ফলে ক্রমাগত হাঁচি, শ্বাসকষ্ট এবং অ্যাটপিক ডার্মাটাইটিস হতে পারে। চোখ লাল হয়ে যায়। চুলকানো শুরু করে। চোখ দিয়ে পানি পড়ে। অনেক সময় বাড়িতে শখের পোষা কুকুর, বিড়াল বা অন্য কোনো জীবজন্তু থাকলে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হতে পারে। এসব জীবজন্তুর লোম থেকে সবধরনের অ্যাটপিক অ্যালার্জি যেমন অ্যালার্জিক রাইনাটিস ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বা একজিমা বেড়ে যেতে পারে।

অ্যালার্জির সমস্যা হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে কী কারণে অ্যালার্জি হচ্ছে তা জানুন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন।

Comments

The Daily Star  | English

Cumilla rape: Main accused among two more arrested

Three others were arrested in the same case early today

34m ago