সুস্বাদু ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তৈরির সেরা টিপস

সারা বিশ্বে আলু দিয়ে তৈরি সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস। ক্ষুধার্ত মানুষকে খুশি করতে এর জুড়ি নেই। চোখে দেখে এটা তৈরি সহজ মনে হলেও আসলে তা নয় মোটেই।
নিখুঁতভাবে বানানো ফ্রাইসে প্রথমবারের মতো কামড় দেওয়ার পর একটি কুড়মুড়ে শব্দ শুনতে পাবেন এবং মুখ ভর্তি নরম আলু আপনাকে স্বাগত জানাবে— এটাই সবাই আশা করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ঘরে বানানো ফ্রাইসগুলো খুব কম সময়ই প্রত্যাশিত মানের হয় এবং প্রায়ই আমরা ভাজার পর এমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস পাই যেগুলো কেউ খেতে চায় না।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সেরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস ভাজার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হল।

সঠিক আলু নির্বাচন
ফ্রাইসের জন্য আপনাকে সঠিক আলু বেছে নিতে হবে। এক্ষেত্রে পুরনো আলু সবচেয়ে ভালো হতে পারে। বড় বড় আলু নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে ফেলুন। এতে করে ফ্রাইসে শুষ্কতা ও শর্করার পরিমাণ অপেক্ষাকৃত কম থাকবে।
ভাজার জন্য আলু প্রস্তুত করা
আলু ছিলে ফেলার পর সেগুলো চতুর্ভুজ বা কিউব আকৃতিতে কেটে ফেলুন। এরপর সমান ভাবে চিকন ও লম্বা করে টুকরো করুন। প্রতিটি টুকরো যতটা সম্ভব একই আকৃতির রাখার চেষ্টা করুন। তারপর সেগুলোকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন, যাতে বাড়তি শর্করা বের হয়ে আসে।
ট্রিপল কুক পদ্ধতি
ট্রিপল কুক পদ্ধতি হচ্ছে কুড়মুড়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস ভাজার সবচেয়ে কার্যকর ও নিখুঁত উপায়। এতে একটু বেশি সময় ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়, কিন্তু অন্য যেকোনো প্রক্রিয়ার চেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে পরিমাণ মতো লবন মিশিয়ে নিন। আলুর টুকরোগুলো সেই পাত্রে ঢেলে কয়েক মিনিট ধরে সেদ্ধ করুন। এরপর পানি থেকে আলুগুলো তুলে একটি কিচেন টাওয়েল দিয়ে পুরোপুরি শুকিয়ে ফেলুন।

বেশি করে ভাজুন
আপনি যদি আগের ধাপটি এড়িয়েও যান এই ধাপটি এড়াবেন না। কারণ আলুগুলো দুবার ভাজা খুবই জরুরি। আলুগুলোকে ডিপ ফ্রাই করার জন্য ফ্রাই প্যানে পরিমাণ মতো তেল নিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করে নিন। এতে আলুগুলো ঢেলে দিন এবং সেগুলোকে এক থেকে দেড় মিনিট ধরে আংশিক ভাবে ভেজে ফেলুন। এরপর আলুগুলো সেখান থেকে সরিয়ে আবারও কিচেন টাওয়েল দিয়ে শুকিয়ে ফেলুন। এবার আধ ভাজা আলুগুলোকে একটি কাগজের শিটের ওপর বসিয়ে ৩০ মিনিটের জন্য ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন। এ অবস্থায় আপনি আলুকে অন্তত ছয় মাস ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
খাওয়ার জন্য আলুগুলো ভাজার আগে সেগুলোর ওপর হালকা করে কর্নফ্লাওয়ারের প্রলেপ দিন। এতে ফ্রাইসগুলোর বাইরের আবরণটি আরও বেশি ক্রিস্পি হবে। তেল গরম করে অল্প করে আলু নিয়ে ভেজে ফেলুন। কারণ একসঙ্গে অনেক আলু ভাজতে গেলে সবগুলো সঠিক তাপ পাবে না। আলুগুলো বাদামি রঙ না হওয়া পর্যন্ত ভাজতে থাকুন।
পরিবেশন
ফ্রাইসগুলো থেকে তেল ঝরিয়ে নিন। এতে ফ্রাইসের ক্রিস্পি ভাব বজায় থাকবে। গরম থাকা অবস্থায় সেগুলোকে 'সিজন' (লবণ মাখানোর প্রক্রিয়া) করুন। ভালভাবে সিজনিং করা ফ্রাইস পেতে আপনি লবণ, মরিচ, প্যাপরিকা, রসুন গুঁড়া ও পেয়াজের গুঁড়া মিশিয়ে নিতে পারেন। এই সিজনিংটি ভালো করে মিশিয়ে ভাজা আলুর ওপর ছিটিয়ে দিন। পাত্রটি ভালো করে নাড়তে থাকুন, যাতে সিজনিংয়ের প্রলেপটি ভালো করে সব আলুর ওপর পড়ে।
ভিন্নধর্মী স্বাদের জন্য ডিপস
সুস্বাদু ডিপ বা সস মাখিয়ে খেতে না পারলে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস খাওয়ার মজাটাই পাওয়া যায় না। টমেটো সস দিয়ে খেতে ভালোই লাগে, কিন্তু ফ্রাইস খাওয়ার অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে এই দুটি ডিপ টেস্ট করে দেখতে পারেন:

হানি মাস্টার্ড সস
উপকরণ
১/৪ কাপ মেয়োনিজ, ১ টেবিল চামচ মাস্টার্ড, ১ টেবিল চামচ মধু, ১ চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার, ১/২ চা চামচ হট সস, এক চিমটি লবণ, সামান্য তেল (ঐচ্ছিক)
তৈরি প্রণালি
মেয়োনিজ, মাস্টার্ড, মধু, অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ও হট সস একত্রে মিশিয়ে ফেলুন এবং এক চিমটি লবণ দিন। এর সঙ্গে সামান্য তেল দিতে পারেন।
গার্লিক ম্যায়ো
উপকরণ
১/২ কাপ তেল, ১/৪ কাপ দুধ, ১ চা চামচ লবণ, ১ চা চামচ গোলমরিচ, ১ টেবিল চামচ রসুনের গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ কিউব করে কাটা রসুন, ২ চা চামচ লেবুর রস, ১ চা চামচ সাদা ভিনেগার
তৈরি প্রণালি
সবগুলো উপকরণকে একটি পাত্রে নিয়ে নাড়াতে থাকুন অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। যখন দেখবেন ঘন ও ক্রিমযুক্ত একটি মিশ্রণ তৈরি হয়েছে এবং কোনো উপকরণ আর আলাদা করে বোঝা যাচ্ছে না, তখন নাড়ানো/ব্লেন্ড করা বন্ধ করুন। মিশ্রণটিকে আরও ঘন করার জন্য অতিরিক্ত লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
Comments