ঢাবিতে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ হলো না বেলায়েতের, প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাবির

শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ৷ গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের (ডি ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অংশ নিয়েছিলেন।
জাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় আহত ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত
বেলায়েত শেখ। ছবি: সংগৃহীত

শত প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পরীক্ষা দিয়েছিলেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ৷ গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের (ডি ইউনিট) ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অংশ নিয়েছিলেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ ভর্তি পরীক্ষায় বেলায়েত কৃতকার্য হতে পারেননি। ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ২৬ পেয়েছেন৷

গাজীপুরের মাওনার বাসিন্দা বেলায়েত শেখ ১৯৮৩ সালে প্রথমবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও টাকার অভাবে সে বছর নিবন্ধন করতে পারেননি। ১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু সে বছর সারা দেশে বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি।

এর কয়েক মাস পরে তিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি 'দৈনিক করতোয়া' পত্রিকার গাজীপুরের শ্রীপুর প্রতিনিধি।

কর্মজীবন শুরুর পরে বেলায়েত আর পড়ালেখা করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ছোট ভাইকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নও থেকে যায় অধরা। বেলায়েত ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক। তার মেয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও কলেজে যেতে আগ্রহী ছিল না। তার বড় ছেলেও পড়ালেখায় আগ্রহী না।

অদম্য বেলায়েত ২০১৯ সালে মাধ্যমিক এবং ২০২১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০২১ সালে তার ছোট ছেলে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

বেলায়েত শেখের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আমি চেষ্টা করেছি, এখানে হয়নি। আমি কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাইনি, নতুন পরিবেশে গিয়ে একটু ভয়ও পেয়েছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেবো। আমার ইচ্ছা, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি লেখাপড়া করবো। অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল, রিকশা চালিয়ে বা হোটেলে কাজ করে আমি পড়ালেখার খরচ জোগাড় করবো।

Comments