শাবিপ্রবিতে উপাচার্যের কার্যালয়সহ সব ভবনে তালা

হল ত্যাগের নির্দেশ উপেক্ষা করে চতুর্থ দিনের মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

উপাচার্যের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়, প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছেন।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমও চলতে পারে না। তাই আমরা সব ভবনে তালা দিয়েছি। তবে চলমান ভর্তি কার্যক্রম বিবেচনা করে রেজিস্ট্রার ভবনে আমরা তালা দেইনি।'

এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে ক্যাম্পাসে 'অবাঞ্ছিত' ঘোষণা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

মুক্তমঞ্চে এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি। তাকে এই ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে হবে। আমরা মাননীয় রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বরাবর চিঠি দেবো। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে এবং কোনো শিক্ষার্থী হল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবে না।'

বিকেলে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্যের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। ছবিটি গতকাল সোমবার, তোলা। ছবি: শেখ নাসির/স্টার

বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবরুদ্ধ করেন।

উপাচার্য তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে ডিনদের এক সভায় যাওয়ার সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে আশ্রয় নেয়। শিক্ষার্থীরা ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে স্লোগান দেন। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের লাঠিপেটা করে। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডও ছোড়ে পুলিশ। হামলায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এই ঘটনার পর রাতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশের কথা সাংবাদিকদের জানান। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ।

রোববারের ঘটনা খতিয়ে দেখতে ৮ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গণিত বিভাগের অধ্যাপন ড. রাশেদ তালুকদারকে প্রধান করে গঠিত এ তদন্ত কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।

এদিকে, পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার সকাল ৮টার আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে শুরু করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সবার জবাবদিহি নিশ্চিত করা, হামলার নির্দেশ দেওয়া উপাচার্যের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা ও পদত্যাগ।

শিক্ষার্থীরা বলেছেন, দাবি মানা না হলে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করবেন না।

তবে আজ সকালে অনেক শিক্ষার্থীকে হল ছাড়তে দেখা যায়।

Comments

The Daily Star  | English

'Extremism raising its head in Bangladesh'

Threat endangers the country’s very existence, Mirza Fakhrul says

27m ago