৪ মাস ছুটি নিয়ে ৬ বছর বিদেশে প্রধান শিক্ষক

প্রায় ৬ বছর ধরে অনুপস্থিত রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন। তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।
প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ৬ বছর ধরে অনুপস্থিত রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়নের লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা খাতুন। তিনি দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম।

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন নাজমা। দেড় বছর পরে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ২ মাসের ছুটি নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যান। ভ্রমণের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, উন্নত চিকিৎসা নিতে তিনি বিদেশে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে তিনি ছুটির মেয়াদ আরও দু'মাস বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করেন। ছুটি শেষ হলেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি এবং পরবর্তীতে নতুন করে ছুটিও নেননি।

সূত্র আরও জানায়, নাজমা খাতুনের চাকরি এখনো বহাল আছে। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে অবগত করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।

এরপর থেকে লাখেরাজটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তারেক রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের পড়াশোনা ও কার্যনির্বাহী কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তাকে কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'স্কুলে জরুরিভাবে একজন প্রধান শিক্ষক প্রয়োজন। তা না হলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে আরও বেশি অসুবিধা হবে। আমাদের বিদ্যালয়ে ২৩৩ জন শিক্ষার্থী আছে।'

'প্রায় দেড় বছর আগে আমি উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানাই। পরে একটি তদন্তও করা হয় এবং এক বছর আগে রংপুরের শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরে প্রতিবেদন দেওয়া হয়,' বলেন তিনি।

মর্নেয়া ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার ও নাজমা খাতুনের স্বামীর ভাই আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নাজমা খাতুন ছুটি নিয়ে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। সেখানে তার প্রতিবন্ধী শিশুর চিকিৎসা চলছে।'

চাকরি বিধিমালা লঙ্ঘন করার পরও কেন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাগমা সিলভিয়া খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কয়েকবার তদন্তও হয়েছে কিন্তু কী কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি তা আমি বলতে পারছি না।'

Comments