ধরলার পানি বিপৎসীমার ১৪ সেমি ওপরে, দুর্ভোগে প্রায় ১ লাখ মানুষ

লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, তিস্তার পানি হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা গ্রামে। ২৯ জুন ২০২২। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, তিস্তার পানি হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র মতে, গতকাল বুধবার রাত ৯টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। আজ সকাল ৬টা থেকে তা বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ধরলাপাড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

গতকাল সকাল থেকে দ্বিতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ায় লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় তিস্তা ও ধরলাপাড়ে প্রায় ১ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

ধরলাপাড়ের বন্যা উপদ্রুত এলাকাগুলো থেকে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে আসবাবপত্র ও গবাদি পশু-পাখি নিয়ে নিরাপদস্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

উজানে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢল আসায় নদীর পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা গ্রামের বানভাসি আসমা খাতুন (৫৫) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঘরের ভেতর ৪-৫ ফুট পানি। গতকাল বিকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, এর আগে প্রথম দফা বন্যায় তারা বাঁধের ওপর ১০ দিন ছিলেন। বলেন, 'এ্যাদোন করি দফায় দফায় বানের পানি আইসলে হামরা বাঁচি ক্যাদোন করি।'

একই গ্রামের রমিচা বেওয়া (৬৪) ডেইলি স্টারকে জানান, প্রথম দফা বন্যায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো মেরামত করা সম্ভব হয়নি। কাজ না থাকায় চড়া সুদে ঋণের টাকায় সংসার চলাচ্ছেন।

তিনি বলেন, 'বানের পানি আইসলে হামারগুলার কষ্টের শ্যাষ থাকে না। কুত্তি যাই আর কুত্তি না যাই দিশেহারা হয়া পড়ি। ঘরোত খাবার নাই। কোটে থাকি খাবার আনি। ম্যালাগুলা যন্ত্রণা হামাকগুলা কষ্ট দ্যায়।'

মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধরলাপাড়ের পানিবন্দি মানুষ সরকারি রাস্তা, বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। অধিকাংশ পানিবন্দি মানুষ কষ্ট করে বাড়িতেই আছেন। বন্যার কারণে এলাকায় কাজ না থাকায় বানভাসিরা আর্থিকভাবে দুরবস্থায় আছেন।'

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার রাতের চেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে নদীর পানি কিছুটা কমেছে। ধরলার পানি এখনো বিপৎসীমার ওপরে। তবে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে আছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা মাসুম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যাদুর্গত এলাকায় গিয়ে বানভাসিদের খোঁজখবর রাখছি। প্রথম দফা বন্যায় বানভাসিদের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি মানুষজনকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

US Visa Policy: Some officials in admin, police ill at ease

A section of officials in the administration and police have a feeling of unease over the US visa curbs, but they would not publicly admit it.

4h ago