সিরাজগঞ্জে আবারও বাড়ছে যমুনার পানি, ভাঙন আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

সিরাজগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আবারও বাড়তে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। উজানের ঢলে যমুনায় পানি বাড়লেও নতুন করে বন্যার আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
তবে, বন্যার আশঙ্কা না থাকলেও পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে নদীপাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে যমুনা নদীতে আকস্মিকভাবে পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২ দিনে যমুনায় প্রায় ৩০ সেন্টিমিটারের বেশি পানি বেড়েছে।
পাউবো আরও জানায়, যমুনা নদীর পানি বর্তমানে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৩৭ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ১৮৮ সেন্টিমিটার নিচে। আর সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি ১১ দশমিক ৩৯ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ১৯৬ সেন্টিমিটার নিচে।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভারতে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পানিবৃদ্ধি আরও বেশ কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। তবে, এ পর্যায়ে যমুনার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না।'
পানি বাড়ায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা না থাকলেও সিরাজগঞ্জে আবারও নদীভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের মানুষ। সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে গত এক সপ্তাহে ঢেকুরিয়া হাটের পূর্বপাশে নির্মাণাধীন ইকোপার্ক এলাকার প্রায় ২৫০ মিটার ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
যমুনা নদী তীর সংরক্ষণ এলাকার পাশে ইকোপার্ক এলাকায় এটি দ্বিতীয়বারের মতো ভাঙন। নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদীপাড়ের মানুষ।
পাউবোর পক্ষ থেকে বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগে চলতি বছরের মে'তে বন্যা শুরুর সময় এই স্থানের উত্তর পাশের ৮০ মিটার এলাকা সিসি ব্লক ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
নাসির উদ্দিন ডেইলি স্টারকে আরও বলেন, 'নদীতে পানি বাড়ার ফলে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধ করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় এবারের বন্যায় নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে পানি বাড়তে থাকায় আবারও আতঙ্কে পড়েছে এ অঞ্চলের নদীপাড়ের মানুষ।'
শাহজাদপুর উপজেলার বামন গ্রামের আজিজুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার শুরুতে মে মাসেই আমার বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে ঘর তৈরির উদ্যোগ নিলেও আবারও ভাঙন শুরু হওয়ায় এখন আতঙ্কে রয়েছি।'
ইতোমধ্যে শাহজাদপুরে নদী তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন।
Comments