পাবনায় পাখির অভয়াশ্রম

পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার সারুটিয়া গ্রামে পাখির অভয়াশ্রম। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

দ্রুত নগরায়ণের কারণে যখন পাখিরা হারাচ্ছে তাদের নিবাস, তখন পাবনার ভাঙ্গুরা উপজেলার সারুটিয়ার মানুষ গ্রামের ঝিলে আশ্রয় নেওয়া অতিথি পাখিদের নিরাপদে থাকার সুযোগ করে দিয়ে গড়ে তুলেছেন অভয়াশ্রম।

খাদ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের নিশ্চয়তা পেয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এ গ্রামের রেললাইনের পাশের ঝিলে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক হাজার দেশি-বিদেশি পাখি। হাজারো অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকছে ঝিলের বিস্তর এলাকা।

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

শীতের আগেই এসব পাখি আসতে শুরু করে। এখন ঝিলের প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে সারাদিন মুখরিত থাকছে পুরো গ্রাম।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ঝিলজুড়ে কয়েক হাজার পাতি সরালি, ডাহুক ও বিভিন্ন প্রজাতির বিদেশি পাখির দৃষ্টিনন্দন অনাবিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন আসছেন পাখিপ্রেমীরা।

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

সারুটিয়ার মো. রইচ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েক বছর আগে এই ঝিলে যখন অল্প কিছু পাখি আশ্রয় নেয় তখন থেকেই গ্রামবাসীরা তাদের কোনো ক্ষতি হতে দেয়নি। নিরাপদ আবাস ও খাদ্য সংস্থানের সুযোগ থাকায় প্রতি বছর পাখির আগমন বাড়তে থাকে। এ বছর এই ঝিলে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরিযায়ী পাখি এসেছে।'

একই গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামের প্রতিটি মানুষ পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবসময় সজাগ থাকেন। কেউ ঝিলে পাখি ধরতে এলে গ্রামবাসীরা তাদের হটিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে সংবাদ দেওয়া হয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে।'

প্রশাসন সবসময় সজাগ দৃষ্টি রেখেছে বলে গ্রামবাসীরা পাখির অভয়াশ্রম রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান তিনি।

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

একই গ্রামের আব্দুল হান্নান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশাল ঝিলের বুকজুড়ে দিনভর পাখিরা কোলাহল করে, ছুটে বেড়ায় ঝিলের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, পাখিরা খেলা করে আপন মনে।'

ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/স্টার

ভাঙ্গুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়সাল বিন আহসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রামের মানুষের সহায়তায় সারুটিয়া গ্রামে রেললাইনের পাশের এ ঝিলে পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।'

গ্রামবাসীদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ঝিলের পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন সবসময় সজাগ রয়েছে বলে জানান ওসি।

ভাঙ্গুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন খান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সারুটিয়ায় পরিযায়ী পাখিদের আগমনে এ এলাকায় পর্যটনের সুযোগ করেছে। পরিযায়ী পাখিদের ঘিরে গ্রামটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।'

Comments

The Daily Star  | English

Metro rail service resumes after 1.5 hours

The setback caused enormous suffering to commuters during the rush hour

1h ago