বান্দরবান

প্রাকৃতিক ও সংরক্ষিত বনের গাছ কাটা থেমে নেই

অবৈধভাবে গাছ কেটে পাচার করা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানে প্রাকৃতিক ও সংরক্ষিত বনে অবৈধভাবে গাছ কাটা ও পাচার থেমে নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন এবং স্থানীয়দের দাবি, চোরকারবারিদের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে উজাড় হচ্ছে এই বনের গাছ।

স্থানীয়রা বলছেন, চোরাকারবারিদের সঙ্গে বন কর্মকর্তাদের যোগাযোগ থাকায় বান্দরবানের গহীন বন থেকে গাছপাচার বন্ধের কোনো উপায় নেই।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলনের সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, 'গভীর বন থেকে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে গাছ কাটার ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে বন উজাড় ও বন্যপ্রাণী ধ্বংস হচ্ছে।'

তিনি জানান, জেলার থানচি, রুমা, লামা, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলার প্রায় সব সংরক্ষিত ও প্রাকৃতিক বন থেকে ক্রমাগত গাছ পাচারের কারণে সেখানে প্রায় বৃক্ষশূন্য অবস্থা তৈরি হয়েছে।

গৌতম দেওয়ান অভিযোগ করেন, 'বন বিভাগ, পুলিশ এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই অঞ্চলে কাঠ পাচারে জড়িত।'

ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের সাঙ্গু, মাতামুহুরি ও বমু বিলছড়ি এই ৩টি সংরক্ষিত বন আছে।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরের নিউ গুলশান, উজানি পাড়া, বালাঘাটা ও কালাঘাটার বিভিন্ন গাছের ডিপোতে প্রাকৃতিক বন থেকে পাচার হয়ে আসা প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট কাঠ মজুদ করেছে চোরাকারবারিরা।

তারা আরও অভিযোগ করেন, বান্দরবান ও চট্টগ্রামের কিছু প্রভাবশালী কাঠ ব্যবসায়ী অসাধু বন কর্মকর্তাদের সহায়তায় গাছপাচারের সঙ্গে জড়িত।

গত ডিসেম্বরে দ্য ডেইলি স্টারে সংরক্ষিত বনের গাছ পাচার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর থেকে কিছুদিন চোরাচালান বন্ধ ছিল।

বান্দরবানের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) হক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, 'সাঙ্গু নদী দিয়ে যে গাছগুলো আসছে সেগুলো সম্ভবত জোত পারমিটের গাছ।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা বান্দরবান শহরের বিভিন্ন ডিপোতে অভিযান চালিয়ে গত দুই দিনে প্রায় ৫৫০ ঘনফুট অবৈধ গাছ জব্দ করেছি। আগামী এক সপ্তাহ অভিযান চালিয়ে যাব।'

গত নভেম্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন এক বিবৃতিতে সাঙ্গু-মাতামুহুরি অভয়ারণ্য ও সংরক্ষিত প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ধ্বংস বন্ধ ও বন ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংঘবদ্ধ কাঠ পাচারকারীরা বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সাঙ্গু বনাঞ্চলকে ধ্বংস করছে।

বান্দরবান বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হক মাহবুব মোরশেদ বলেন, 'আমরা বান্দরবান শহরের বিভিন্ন গাছের ডিপোতে অভিযান শুরু করেছি। এজন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English

‘We knew nothing about any open letter’

Journalist Bibhuranjan’s son says after identifying his body

5h ago