নদীভাঙনে হারিয়ে যাচ্ছে বসতভিটা

ভাঙা-গড়ায় কাটছে নদীপাড়ের মানুষের জীবন

ধরলার ভাঙনে ছয় শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বসতভিটা হারিয়ে নির্বাক নুর বানু (৫৮)। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমার গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলামের স্ত্রী নুর বানুর আশ্রয় হয়েছে অন্যের ঘরে।
বসতভিটা হারিয়ে নির্বাক নুর বানু। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

ধরলার ভাঙনে ছয় শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বসতভিটা হারিয়ে নির্বাক নুর বানু (৫৮)। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমার গ্রামের মৃত আমিনুল ইসলামের স্ত্রী নুর বানুর আশ্রয় হয়েছে অন্যের ঘরে।

নুর বানুর মতো এভাবে ধরলার ভাঙনে গৃহহীন হয়েছেন চর ফলিমারী গ্রামের রফিক মিয়া (৫৬), আশরাফ আলী (৬০), রোকেয়া বেগম (৪৮), জরিনা বেগমসহ (৪৬) অনেকে।

ভাঙা-গড়ার মধ্যেই কাটছে নদীপাড়ের মানুষের জীবন। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

নুর বানু জানান, বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। জমি কিনে বসতভিটা তৈরির কোনো সামর্থ্য নেই। তাই নিরুপায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের ঘরে। এর আগে, ধরলা নদী কেড়ে নিয়েছিল তার কয়েক বিঘা আবাদি জমি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার চর গোকুন্ডা গ্রামের মফিজুল ইসলাম (৫৫) জানান, তিস্তার ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। তার মতো আরও ২৫টি পরিবারের একই অবস্থা। তিনি ঘর ভেঙে নৌকায় করে অন্য চরে নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে ভাঙা-গড়ার মধ্যেই কাটছে তাদের জীবন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকার সুফিয়া বেওয়া (৬২) বলেন, তিস্তার ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে এখন গৃহহীন। আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। নদীগর্ভে চলে গেছে আবাদি জমি। প্রতিবছর তিস্তার ভাঙনে আবাদি জমি, ফলের বাগান ও বসতভিটা হারিয়ে তার পরিবার এখন ভূমিহীন ও নিঃস্ব।

তিস্তা ও ধরলা নদ-নদীর প্রায় ১০০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদ-নদীর প্রায় ১০০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের কারণে গত এক সপ্তাহে অন্তত দুই হাজার পরিবার বসতভিটা হারিয়েছে। নদ-নদী গর্ভে চলে গেছে আবাদি জমি ও নানা স্থাপনা। এখনো ভাঙন অব্যাহত আছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদ-নদীর ভাঙনকবলিত ২০টি স্থানে জিও-ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলে প্রাথমিকভাবে ভাঙন ঠেকানোর কাজ চলছে। নদ-নদীর ভাঙনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর ভাঙনকবলিত ১২টি স্থানে জিও-ব্যাগ ও জিও টিউব ফেলা হয়েছে। তারা ভাঙনকবলিত এলাকাগুলো নিয়মিত মনিটরিং করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago