মেঘনা নদী দখল করে বালু ব্যবসার অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে বাঁশ ও টিনের বেড়া দিয়ে নদী দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে।
গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তীর থেকে নদীতে প্রায় ৩০ ফুট গিয়ে বাঁশ ও টিন দিয়ে ৭০ মিটার দীর্ঘ ও ৫০ মিটার প্রস্থের বেড়া দেওয়া হয়েছে। সেখানে অর্ধেকটা নদীর জায়গা ভরাট করে বালুর ব্যবসা চলছে।
গজারিয়া ফেরিঘাটের সংযোগ সড়কের সীমানা প্রাচীর ও সড়ক ঘেঁষে বেড়া নির্মাণ করা হয়েছে। আর, সড়কের পশ্চিম পাশে ব্যবসায়ী মো. মোফাজ্জল হোসেন ‘মেসার্স মোফাজ্জল এন্টারপ্রাইজ’ মানে তার নিজের দোকান এবং পাশেই তার মালিকানাধীন ‘ইলিশের বাড়ি’ নামে একটি রেস্তোরাঁ নির্মাণ হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় আট মাস ধরে মো. মোফাজ্জল সেখানে বালুর ব্যবসা করছেন। বেড়া দিয়ে নদী দখল করেন চার সপ্তাহ আগে। বালু বিক্রির পর তা ট্রাকে করে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রলারে করে বালু এনে ড্রেজারের সাহায্যে তা ফেলা হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্র জানায়, নদীর জায়গা দখল করলেও মোফাজ্জলের দাবি এটি তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গা।
জানতে চাইলে মেসার্স মোফাজ্জল এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটর ও অভিযুক্ত দখলকারী মো. মোফাজ্জল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘নদীর পাড়ে বালু ব্যবসার সুবিধার জন্য বাঁশ ও টিনের বেড়া দিয়েছি। বর্ষায় পানি বেড়ে যেন বালু নদীতে না চলে যায়, এজন্য বেড়া দিয়েছি। নিয়ম মেনেই বেড়া দিয়েছি। আর, প্রায় ৬০ শতাংশ ভরাট করেছি।’
জায়গাটি তিনি পৈত্রিক সূত্রে পেয়েছেন বলে দাবি করেন মোফাজ্জল।
যোগাযোগ করা হলে শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের নয় নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. নাসির উদ্দিন জানান, বিআইডব্লিউটিএর জায়গা দখল করে ব্যবহার হচ্ছে। বাঁশ ও টিনের বেড়া দেওয়া হয়েছে বালু ব্যবসার জন্য।
সোনারগাঁ উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) গোলাম মুস্তাফা মুন্না দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি দখলকৃত জায়গাটি নদীর। ব্যক্তিগত মালিকানা হবে না এ জায়গাটি।’
নদী দখলের অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি নদীর জায়গা দখল হয়েছে। তাকে মৌখিকভাবে সেখান থেকে বাঁশ ও টিনের বেড়া সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। এরপর যদি বেড়া না সরায়, তাহলে শিগগির উচ্ছেদ করা হবে।’
Comments