‘অভিবাসন ঝুঁকি কমাতে পারস্পরিক সমঝোতা বাড়ানো সময়ের দাবি’

অভিবাসীদের মানবাধিকার ও সুরক্ষার ঘাটতি মেটাতে বিশ্বব্যাপী সংহতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আইএমআরএফের গোলটেবিল বৈঠক-৪ এ বক্তব্য দিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ছবি: সংগৃহীত

অভিবাসীদের মানবাধিকার ও সুরক্ষার ঘাটতি মেটাতে বিশ্বব্যাপী সংহতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল বুধবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন পর্যালোচনা ফোরামের (আইএমআরএফ) গোলটেবিল বৈঠক-৪ এ প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এ আহ্বান জানান।

বৈঠকে বৈশ্বিক অভিবাসন কম্প্যাক্টের (জিসিএম) ৫টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে উপাত্ত, তথ্যের বিধান, ঝুঁকি কমানো, বৈষম্য দূর করা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা।

বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংকটময় পরিস্থিতিতে আটকে পড়া অভিবাসীসহ সব অভিবাসীদের অভিবাসন যাত্রার ঝুঁকি কমানোর জন্য সরকার, মানবাধিকার সংস্থা, কনস্যুলেট ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।

স্বাগতিক দেশ ও মাতৃভূমির আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভিবাসীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বৈশ্বিক অভিবাসন কম্প্যাক্ট ও এজেন্ডা ২০৩০ এর সমন্বয়মূলক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন এবং এক্ষেত্রে অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত সব অংশীজন ও জাতিসংঘের অভিবাসন নেটওয়ার্কের প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।

অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা বর্ণবাদ, জাতিগত বিদ্বেষ, ভুল তথ্য উপস্থাপন, তাদেরকে বিতর্কিত করা ও অসহিষ্ণুতার মতো বিষয়গুলোর দিকে আরও গভীরভাবে দৃষ্টি দেওয়ার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। অন্তর্ভুক্তিমূলক মূল্যবোধ ও সহিষ্ণুতার প্রচার এগিয়ে নিতে এবং অভিবাসন ও অভিবাসীদের সম্পর্কে দেশের নাগরিকদের কাছে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে তিনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সহযোগিতা চান। এ ছাড়াও সার্বিকভাবে এ প্রসঙ্গে আরও বেশি বৈশ্বিক সহযোগিতারও আহ্বান জানান তিনি।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালকের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পর্যায়ে অভিবাসনের বিভিন্ন দিক ও সম্ভাব্য সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন।

উল্লেখ্য, আইএমআরএফ বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এ ফোরামে যোগ দিতে আসা একাধিক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধানদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। এ বৈঠকগুলোতে ২০২৩-২৫ মেয়াদে মানবাধিকার কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ জড়িত আছে এরকম অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক 'অগ্রগতি ঘোষণা'র মধ্য দিয়ে ২০ মে শেষ হবে ৪ দিনব্যাপী আইএমআরএফ সভা।

আইএমআরএফের অগ্রগতি ঘোষণার সঙ্গে কাজ করার জন্য জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও লুক্সেমবার্গের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত অলিভার মেইজকে মনোনীত করেন জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ শাহিদ।

জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এবারের আইএমআরএফ-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহাইল এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।

Comments