মালয়েশিয়ায় ভিসা জালিয়াতি: ৪ বাংলাদেশিসহ গ্রেপ্তার ৬

সংবাদ সম্মেলনে খায়রুল দাজাইমিসহ মালয়েশিয়ান অভিবাসন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ছবি: স্টার

মালয়েশিয়ায় অভিবাসীকর্মীদের বৈধতা দেওয়ার নামে ভিসা জালিয়াতি ও অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে ৪ বাংলাদেশিসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তারকৃতদের নাম প্রকাশ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

গত ৮ জুন কুয়ালালামপুরের জালান লুমুত ও সেলাঙ্গরের আমপাংয়ের পান্ডান কাহায়ায় অভিযান চালিয়ে ২ বাংলাদেশি ও তাদের মালেশিয়ান স্ত্রী এবং  আরও ২ সহযোগী বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১০ জুন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি খায়রুল দাজাইমি দাউদ।

মালয়েশিয়ায় চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রাম (আরটিকে) থেকে প্রতারণামূলক আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে এই সিন্ডিকেট ২ মিলিয়নের বেশি মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত উপার্জন করেছে বলে ধারণা করছে অভিবাসন বিভাগ।

তদন্ত করে অভিবাসন বিভাগ জানতে পেরেছে, মালয়েশিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা (মাইপিআর) মর্যাদাধারী ৩৬ বছর বয়সী একজন বাংলাদেশি এই সিন্ডিকেটের মূল পরিকল্পক ও পরিচালনাকারী। তিনি মালয়েশিয়ান নারীকে বিয়ে করার পর ২০১৫ সালে স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে সিন্ডিকেটটি কমপক্ষে ২ বছর ধরে সক্রিয় রয়েছে।

অভিযানে বাংলাদেশের ৪৫৭, ইন্দোনেশিয়ার ৮, ভারতের ৮, পাকিস্তানের ৮, মিয়ানমারে ৬ ও নেপালের ১টিসহ মোট ৪৮৮টি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়াও জব্দ করা হয়েছে ১২টি কোম্পানির সিল, দুটি কম্পিউটারের সেট এবং নগদ ৩৮ হাজার ৩০৮ রিঙ্গিত, যা আরটিকে কার্যক্রমে ব্যবহার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তদন্তে জানা গেছে, সিন্ডিকেট প্রতিটি অভিবাসীকর্মীকে ৩ হাজার ৫০০ রিঙ্গিত ও ৪ হাজার ২০০ রিঙ্গিতের মধ্যে এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরের জন্য একটি টেম্পোরারি ওয়ার্কিং ভিজিট পাস (পিএলকেএস) পাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।

'এই সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আমরা অনুমান করি যে, সিন্ডিকেট এখনও পর্যন্ত অন্তত ২ দশমিক ০৪ মিলিয়ন রিঙ্গিত অবৈধ আয় করেছে', বলেন অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক।

তিনি আরও বলেন, 'আমরা আমাদের ডেটাবেসও পরীক্ষা করব এবং যদি জব্দ করা এই ৪৮৮ জন পাসপোর্টধারীর মধ্যে কেউ ইতোমধ্যে তাদের ওয়ার্কিং ভিজিট পাস (পিএলকেএস) পেয়ে থাকে, তবে তা প্রত্যাহার করা হবে।'

তবে, আরটিকে পরিচালনার জন্য অভিবাসন বিভাগ কোনো ব্যক্তি বা সংস্থাকে নিয়োগ করেনি।

'আমরা জনসাধারণকে, বিশেষ করে নিয়োগকর্তা ও বিদেশিকর্মীদের পরামর্শ দেই, কোনো ধরনের তৃতীয় পক্ষ ছাড়া শুধুমাত্র ইমিগ্রেশন বিভাগের সঙ্গে সরাসরি লেনদেন করতে', বলেন দাতুক সেরি খায়রুল দাজাইমি দাউদ।

গ্রেপ্তার ৬ জনকে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে এবং অভিবাসন আইন ও ইমিগ্রেশন রেগুলেশনের পাশাপাশি পাসপোর্ট আইনের অধীনে এ ঘটনার আরও তদন্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক।

'আরও কতজন এর সঙ্গে     জড়িত ছিল, তা জানতে কর্তৃপক্ষ তদন্ত চালাচ্ছে', যোগ করেন তিনি।

লেখক: মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Rally begins near Jamuna demanding ban on Awami League

The demonstration follows a sit-in that began around 10:00pm last night in front of the Chief Adviser's residence

54m ago