মিশরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশিদের বর্ষবরণ
পরিবার, আত্মীয়-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকা প্রবাসীরা হাজার মাইলের দূরত্ব আর সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কষ্ট ভুলে উৎসবে মেতে ওঠেন পহেলা বৈশাখে। আবহমান বাংলার অসাম্প্রদায়িক চেতনার সার্বজনীন উৎসব বাংলা বর্ষবরণের বর্ণাঢ্য আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করে নেয় মিসরপ্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানী কায়রোয় হোটেল শেরাটনে মিসরে বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশে ইজিপ্ট এয়ারের সেলস এজেন্ট অ্যালো ঢাকা অ্যাভিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত ব্যতিক্রমী ও বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আয়োজনে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, মিশরের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও শীর্ষস্থায়ী ব্যবসায়ী এবং বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশ নেন।
রঙ-বেরঙের বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশীয় পোশাক, সাজসজ্জা, ভোজনরসিক বাঙালির প্রিয় পিঠা-পায়েস আয়োজন আর সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে হোটেলের পুল সাইড প্রাঙ্গণটি হয়ে ওঠেছিল আনন্দমুখর ক্ষুদ্র বাংলাদেশ। দেশের সীমানা পেরিয়ে সুদূর বিদেশের মাটিতে নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরার এ প্রয়াস দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রকাশ এবং দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির শ্রেষ্ঠত্বেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
অনুষ্ঠানে মিশরের পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ড. ঘাদা শ্যালাবি বিশেষ অতিথি ছিলেন। বক্তব্য রাখেন মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম ও বাংলাদেশে ইজিপ্ট এয়ারের সেলস এজেন্ট অ্যালো ঢাকা অ্যাভিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আলী সামীর।
মিসরের পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ড. ঘাদা শ্যালাবি ও অ্যালো ঢাকা অ্যাভিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আলী সামীর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর আগত অতিথিদের নববর্ষের শুভেচ্ছা
ইফতারের আগে মিশরের দূর-দূরান্ত থেকে প্রবাসীরা রঙ-বেরঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, পরে ছুটে আসেন বৈশাখী বরণ উৎসবে অংশ নিতে। মিসরের ঐতিহ্যবাহী পানীয় কোষাব, খেজুর, মা'হসী, মুরগির সুপ, ফেরাখ মা'হামমারা, কাবাব, এইশ বেলাদী, তাহিনা, তাজা ফল ও পুদিনার চা দিয়ে ইফতার আঢোজন করা হয়।
তারাবীর নামাজের বিরতির পর প্রবাসীদের একটি দল ঐতিহ্যবাহী ঢাকঢোল বাজিয়ে ও বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ প্রদক্ষিণ করেন হোটেলটির সুইমিংপুল সাইড। এরপর সাংস্কৃতিক পর্বে এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো-সহ বেশ কয়টি লোকজ সংগীত পরিবেশন করেন প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীরা।
সেহেরি আপ্যায়নে ৫ তারকা হোটেলের মুখরোচক খাবারের পাশাপাশি রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী ফাহিমা তাহসিনের তৈরি করে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী খাবার পান্তা ইলিশ, বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, পায়েশ, জিলাপি ও নকশিসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা পরিবেশন করা হয় ।
আফছার হোসাইন: কায়রোপ্রবাসী বাংলাদেশি লেখক, সাংবাদিক
Comments