বাড়ছে সুতা ও কাপড় রপ্তানি

বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক বাজারে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ মার্কেট রপ্তানি নিয়ে একটি দৃঢ় অবস্থান তৈরি করেছে। রপ্তানির দিক দিয়ে চীনের পরেই দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

যদিও পোশাক তৈরির মূল কাঁচামাল তুলার আমদানিনির্ভর বাংলাদেশ। তবে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস উৎপাদনকারীদের মধ্যে সুতা ও কাপড়ের উৎস হিসেবে দেশের উৎপাদনকারীরা দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন।

সরকারি প্রণোদনার কারণে গার্মেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ও সংশ্লিষ্ট মধ্যম পণ্যের রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সুতা, কাপড় ও ইয়ার্ন ওয়েস্ট রপ্তানি করে বাংলাদেশ জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ৮ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার আয় করেছে। যা এর আগের বছরের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেশি। 

সুতা ও কাপড় রপ্তানি থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ডলার আয় করে, যেটি এর আগের বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।

সুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ওয়েল গ্রুপ বছরে ৭০ লাখ থেকে ৮০ লাখ ডলারের সুতা রপ্তানি করে। যার মধ্যে আছে পলিয়েস্টার, সিন্থেটিক, সিউইং থ্রেড ও এম্ব্রয়ডারি থ্রেড। এগুলো মূলত তুরস্কে রপ্তানি হয়।

ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, তাদের রপ্তানি করা সুতা পুনরায় মধ্য এশিয়ার কিছু দেশে রপ্তানি করা হয়।

তিনি জানান, ২০০৯ সালে সরকারের নতুন বাজার ও পণ্যের জন্য দেওয়া প্রণোদনা তার মতো অন্যান্য স্পিনার, উইভারদেরও স্থানীয় গার্মেন্টস কারখানাগুলোর সুতা ও কাপড়ের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরে রপ্তানিতে উৎসাহিত করে।

আরেকটি বড় কাপড় ও তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হলো এনভয় গ্রুপ। যারা তুরস্ক, চীন, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ও ভারতে ডেনিম কাপড় রপ্তানি করে।

এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটি মাসে ৮ লাখ গজ ডেনিম কাপড় রপ্তানি করে থাকে।

তিনি বলেন, 'ডেনিমের সুতা ও কাপড়ের সম্ভাবনা খুবই ভালো। এ কারণে স্থানীয় স্পিনার ও উইভাররা প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করছেন এবং তাদের উৎপাদন সক্ষমতাও বাড়াচ্ছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'ডেনিম সুতা ও কাপড়ের রপ্তানি বাড়ছে।'

স্থানীয় উদ্যোক্তারা প্রচুর পরিমাণে ডেনিম উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে বলেও জানান তিনি।

ওয়েল গ্রুপ বর্তমানে মাসে ১ হাজার টন সুতা উৎপাদন করে। তারা এই উৎপাদনক্ষমতা আরও বাড়ানোর চিন্তা করছে, কারণ স্থানীয় ও বিশ্ব বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, 'সুতা ও কাপড় রপ্তানি খুব একটা লাভজনক নয়। সরকারের দেওয়া রপ্তানি প্রণোদনার কারণে এটি লাভজনক হয়েছে।'

সম্প্রতিকালে বাংলাদেশ থেকে সুতা কিনতে রাজি হয়েছে ভিয়েতনাম। কাঁচামাল হিসেবে দেশটি ভারত থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ টন সুতা কেনে।

একইভাবে, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া, মিশর ও তাইওয়ানের টেক্সটাইল মিলার, সুতা ও কাপড় আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আরও সুতা ও কাপড় কেনার জন্য বিটিএমএর সঙ্গে আলোচনা করছে বলেও জানান খোকন।

হাতে বোনা সুতার চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় স্পিনার ও উইভাররা তাদের উৎপাদন ক্ষমতা সম্প্রসারণ করছেন।

পরবর্তী ২ বছরে বাংলাদেশের সুতা উৎপাদনের সক্ষমতার সঙ্গে আরও ২৫ লাখ স্পিন্ডল যোগ হবে। খোকনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে তৈরি পোশাক খাতের কাঁচামাল উৎপাদনের জন্য ১ কোটি ৩৫ লাখ স্পিন্ডল সুতা ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
2001 Ramna Batamul attack

HC fixes May 8 for verdict on Ramna Batamul bomb blast

On April 14, 2001, two bombs went off during 1408 Pahela Baishakh celebrations, leaving 10 dead, many injured

14m ago