রূপালি পর্দার ‘নবাব’র প্রয়াণ দিন

আনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা আনোয়ার হোসেন রূপালি পর্দায় 'নবাব সিরাজউদ্দৌলা' হিসেবে বেশি খ্যাত। ২০১৩ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

মাত্র আট বছরে ভুলতে বসেছি তার কথা। খুব বেশি উচ্চারিত হয় না তার নাম। এই অভিনেতার স্মরণে আজ কোথাও কোনো আয়োজনের সংবাদ পাওয়া যায়নি।

আনোয়ার হোসেন স্মরণে সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে খুব চমৎকার সম্পর্ক ছিল। যখন তার কথা মনে হয় ছায়াছবির মতো অনেক ঘটনা চোখের সামনে ভিড় করে।'

'এফডিসিতে কিংবা সিনেমার শুটিংয়ের ফাঁকে আড্ডা দিয়েছি। বড় প্রাণখোলা মানুষ ছিলেন তিনি। সুন্দর করে হাসতেন। কানের মধ্যে বাজে সেই হাসির ঝলক।'

'আমজাদ হোসেন পরিচালিত "গোলাপী এখন ট্রেনে" সিনেমার "আছেন আমার মোক্তার" গানের সঙ্গে তার অসামান্য অভিনয় দর্শকের মধ্যে আলাদা আবেদন তৈরি করেছিল। এই গানে তার অভিনয়ে সত্যি অন্য এক ব্যাপার ঘটেছিল। পর্দায় তার অভিনয় অন্যরকম মাত্রা যোগ করতো। "আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার বারিস্টার" গানটির জন্যে আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলাম,' যোগ করেন সৈয়দ আব্দুল হাদী।

আনোয়ার হোসেন ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান। ১৯৭৫ সালে প্রবর্তিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের প্রথম বিজয়ী অভিনেতা তিনি। সেসময় নারায়ণ ঘোষ মিতা পরিচালিত 'লাঠিয়াল' ছবিতে অভিনয়ের জন্য তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার দেওয়া হয়।

এরপর, ১৯৭৮ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত 'গোলাপী এখন ট্রেনে' ছবিতে সহ-অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান।

আনোয়ার হোসেন ১৯৩১ সালের ৬ নভেম্বর জামালপুরের সরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলজীবনে প্রথম অভিনয় করেন আসকার ইবনে শাইখের 'পদক্ষেপ' নাটকে। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকায় আসেন।

অভিনয় জীবনের ৫১ বছরে প্রায় পাঁচ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০৭ সাল পর্যন্ত অভিনয় করেছেন আনোয়ার হোসেন। ১৯৫৮ সালে 'তোমার আমার' সিনেমার মাধ্যমেই অভিনয়ের সূচনা।

১৯৬৪ সালের ১ মে তার অভিনীত 'দুই দিগন্ত' ছবি দিয়ে ঢাকার 'বলাকা' সিনেমা হলের উদ্বোধন হয়েছিল।

তার অভিনীত অন্যতম সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে— জহির রায়হান পরিচালিত 'কাঁচের দেয়াল' ও 'জীবন থেকে নেয়া', মহিউদ্দিন পরিচালিত 'তোমার আমার' ও  'সূর্যস্নান', কাজী জহির পরিচালিত 'বন্ধন', খান আতাউর রহমান পরিচালিত 'নবাব সিরাজউদ্দৌলা', এম এ হামিদ পরিচালিত 'অপরাজেয়', সুভাষ দত্ত পরিচালিত 'অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী', জহিরুল হক পরিচালিত 'রংবাজ', আলমগীর কবির পরিচালিত 'ধীরে বহে মেঘনা', আমজাদ হোসেনের 'নয়নমনি' ও 'ভাত দে'।

Comments

The Daily Star  | English

Housing, food may top the manifestos

Panels contesting Ducsu election are signalling key reform priorities in their upcoming manifestos

11h ago