গানের সম্রাট সুরের রাজা মান্না দে

মান্না দে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে গেছেন ৯ বছর আগে। কিন্তু তার সৃষ্টি আজও রয়ে গেছে সংগীতে। তিনি ছিলেন গানের সম্রাট ও সুরের রাজা।
মান্না দে। ছবি: সংগৃহীত

মান্না দে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে গেছেন ৯ বছর আগে। কিন্তু তার সৃষ্টি আজও রয়ে গেছে সংগীতে। তিনি ছিলেন গানের সম্রাট ও সুরের রাজা।

২০১৩ সালের সালের ২৪ অক্টোবর পরলোকগমন করেন বরেণ্য এই শিল্পী।

দীর্ঘ সংগীত জীবনে তিনি প্রায় ৪ হাজার গান গেয়েছেন।

মান্না দে। ছবি: সংগৃহীত

১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রবোধ চন্দ্র দে। সবার কাছে যিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন মান্না দে নামে। তার মায়ের নাম মহামায়া ও বাবা পূর্ণা চন্দ্র দে। তার সংগীতে অনুপ্রেরণা ছিলেন কাকা সংগীতাচার্য কৃষ্ণ চন্দ্র দে।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে ১৯৪২ সালে কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে'র হাত ধরে বলিউডের সিনেমায় অভিষেক হয় মান্না দে'র। কাকার সংগীত পরিচালনায় 'তামান্না' সিনেমায় প্রথম একটি ডুয়েট গানে কণ্ঠ দেন তিনি। একক গায়ক হিসেবে 'রামরাজ্য' সিনেমায় প্রথম সুযোগ আসে। ১৯৪৩ সালে সেই সিনেমায় 'গায়ি তু তো গায়ি সীতা সতী' গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৫০ সালের 'মাশাল' সিনেমার মাধ্যমে শচীন দেববর্মণের সঙ্গে মান্না দে'র জুটি তৈরি হয়।

ভারত জুড়ে মান্না দে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ১৯৫৩ সালে 'দো বিঘা জমিন' সিনেমা মুক্তির পর। সলিল চৌধুরীর সুর ও সংগীতে এই সিনেমার গানেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

মান্না দে'র কণ্ঠে আজও শ্রোতারা যে গানগুলো পছন্দ করেন— জানি তোমার প্রেমের যোগ্য আমিতো নই, তীর ভাঙা ঠেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি, এ জীবনে যত ব্যথা পেয়েছি, সেই তো আবার কাছে এলে, আবার হবে তো দেখা, ক ফোঁটা চোখের জল ফেলেছ যে তুমি ভালবাসবে, তুমি অনেক যত্ন করে আমায় দুঃখ দিতে চেয়েছ, যদি কাগজে লেখো নাম, আমি ফুল না হয়ে কাঁটা হয়েই বেশ ছিলাম, কত দিন দেখিনি তোমায়, খুব জানতে ইচ্ছে করে, মুকুটটাতো পড়েই আছে রাজাই শুধু নেই।

১৯৫৩ সালে সুলোচনা কুমারণকে বিয়ে করেন মান্না দে। তাদের ২ কন্যা সুরোমা ও সুমিতা।

বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে তিনি প্রথম 'লপট কে পাহানে' গানটি গেয়েছিলেন এবং আশা ভোঁসলের সঙ্গে গেয়েছিলেন 'ও রাত গয়ি ফির দিন আয়া'।

মান্না দে ১৯৬৯ সালে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান 'মেরে হুজুর' সিনেমার গানের জন্য।

১৯৯২ সালের পর থেকে হিন্দি কোনো সিনেমায় তিনি কণ্ঠ দেননি। তবে, বাংলা সিনেমায় গান গেয়েছেন। সংগীত জীবনে হিন্দি ও বাংলার পাশাপাশি মৈথিলী, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি, কন্নড়, মালায়ালম ভাষাতে গান গেয়েছেন তিনি।

২০০৫ সালে মান্না দে'র আত্মজীবনী 'জীবনের জলসাঘরে' প্রকাশিত হয়। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় তাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র। যার শুটিং হয়েছে কলকাতার কফি হাউজে।

মান্না দে সংগীতে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Where should I invest my money?

Amid persistently higher inflation in Bangladesh for more than a year, the low- and middle-income groups are struggling to meet their daily expenses.

13h ago