গান কনটেন্ট হলে পণ্য হয়ে যায়, শিল্প থাকে না: কুমার বিশ্বজিৎ

kumar bishwajit
কুমার বিশ্বজিৎ। ফাইল ছবি

কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের জন্মদিন আজ বুধবার। চিরসবুজ এই গায়ক ১৯৬৩ সালের ১ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জন্মগ্রহণ করেন। সংগীত জীবনে একদিকে যেমন মানুষের অজস্র ভালোবাসা পেয়েছেন, তেমনি শ্রোতাদের উপহার দিয়ে গেছেন অসংখ্য কালজয়ী গান।

জন্মদিনের স্মৃতি ও সংগীতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে।

এখন পর্যন্ত জন্মদিনে পাওয়া সেরা উপহার কী?

আমার বাবা ১৯৭৬ সালে একটা গিটার দিয়েছিলেন আমার জন্মদিনে। সেটাই এখন পর্যন্ত সেরা উপহার। এর চেয়ে বড় উপহার আর পাইনি এই জীবনে।

আর আজকের জন্মদিনের জন্য আমার ছেলে কুমার নিবিড় কানাডা থেকে একদিন আগে চলে এসেছে। কয়েকদিন আগেই তার ওখান থেকে আসলাম। এটা এবারের জন্মদিনে আমার জন্য সেরা উপহার হয়ে থাকবে। 

ছেলের সঙ্গে দেখা করতে কানাডায় গিয়ে কেমন কাটলেন?

ছেলেকে দেখতে কানাডায় গিয়েছিলাম। খুব সুন্দর সময় কেটেছে বাবা-ছেলের। মুহূর্তগুলো আমাদের জন্য খুবই আনন্দঘন ছিল। সেখান থেকে এসেছি ১৭ মে। এসেই গান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। 

গান এখন অনেকের কাছে কনটেন্ট। বিষয়টি কেমন লাগে আপনার?

আজীবন যে কোনো গানকে সৃষ্টিই মনে করে এসেছি। কনটেন্ট বা পণ্য হিসেবে দেখিনি কখনো। এখন তো গানবাজনা পণ্য হয়ে গেছে। মানুষ এখন বলে না গান দিচ্ছি, বলে কনটেন্ট দিচ্ছি। গান, শিল্প-সংস্কৃতি আবার কনটেন্ট কি করে হয়? এগুলো কনটেন্ট হয়ে গেলে, তখন আর শিল্প-সংস্কৃতি বলে কিছু থাকে না। সব পণ্য হয়ে যায়। 

সংগীতাঙ্গণ এমন হওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন?

এখনকার যারা প্রডিউসার, তাদের অধিকাংশেরই দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবসায়িক। তারা শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত না। শিল্প-সংস্কৃতির কোনো কিছু তারা বোঝেন না। বাজারে কোনটা চলবে, কোনটা চলবে না, তাদের শুধু এই চিন্তা। 

একসময় তারা মিউজিক ভিডিও নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এখন তারা গান বাদ দিয়ে নাটকের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে গেছে। নাটক বেশি চলে, নাটকের ডিউরেশন বেশি। তারা তাদের লাভটাই দেখছে। 

গান নিয়ে রাজনীতির কথা শোনা যায়। আপনি কী মনে করেন?

গান নিয়ে কিছু গোষ্ঠীভিত্তিক রাজনীতি চলে। এর মধ্যে কোনো গোষ্ঠীর সঙ্গে চললে গানের শো বেশি পাওয়া যায়, আরেকজনের সঙ্গে থাকলে মিউজিক ভিডিও করা যাবে। এসব করে কি গান হয়? 

আমার মনে হয় নিজের প্রতিভা, নিজের কাজ যদি ঠিক থাকে, তাহলে কাউকেই দরকার পড়ে না। আশা করি একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। 

গানের এই দীর্ঘ যাত্রায় কোনো আফসোস আছে?

সবসময় চেয়েছি ভালো কথা ভালো সুরের গান করা, সেটা করেছি। কারো কাছে বিক্রি হইনি। আমার কর্মের চেয়েও প্রাপ্তি বেশি। মানুষ আমাকে ভালোবাসে। মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটা অনেক। বাংলা গান বহির্বিশ্বে আরও ছড়িয়ে দিতে আমাদের অনেক কিছু করা উচিত ছিল। সেটা খুব বেশি করতে পারিনি।

আপনার পুরোনো কিছু গান নতুন করে প্রকাশ করার কথা, কতটা অগ্রগতি হলো?

আমার গাওয়া 'প্রশ্ন তোমার' গানটা নতুন সংগীতায়োজনে করেছি। গানটা কলকাতা থেকে সংগীতায়োজন করা হয়েছে। লিটন অধিকারী রিন্টুর লেখা এই গানের শুটিং কানাডায় করেছি।

Comments

The Daily Star  | English
special security for foreign investors in Bangladesh

Police, Bida launch special security measures for foreign investors

Held meeting with officials of foreign companies, introduced dedicated emergency contact line

3h ago