‘বাপ্পীদার বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে যাওয়া হলো না’

কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী ও সংগীত পরিচালক বাপ্পী লাহিড়ীর সঙ্গে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছিল গভীর সম্পর্ক। তারা বিভিন্ন দেশে একসঙ্গে অনেক শো করেছেন।

আজ বুধবার মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন বাপ্পী লাহিড়ী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

সদ্য প্রয়াত বাপ্পী লাহিড়ীর স্মৃতিচারণ করে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন কুমার বিশ্বজিৎ।

তিনি বলেন, 'বাপ্পী লাহিড়ীর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় লন্ডনে। একটি শো করতে গিয়েছিলাম অনেক বছর আগে। আমি ও আইয়ূব বাচ্চু ছিলাম। সেখানে বাপ্পী লাহিড়ী ছাড়াও ভারতের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ছিলেন। প্রথম পরিচয় হওয়ার পর থেকেই তিনি আমাকে আপন করে নিয়েছিলেন। আমাদের সম্পর্ক অটুট ছিল সারাজীবন। তিনি আমাকে আপন ভাইয়ের চোখে দেখতেন। আমিও সব সময় ভাবতাম তিনি আমার বড় ভাই।'

'কত স্মৃতি তার সঙ্গে আমার। অসংখ্য স্টেজ শো করেছি। একসঙ্গে খেয়েছি, আড্ডা দিয়েছি। সবকিছু এক এক করে চোখের সামনে ভাসছে।'

'স্টেজে তিনি ছিলেন একেবারেই অন্যমানুষ। আড্ডায় প্রাণখোলা আবার গান করার সময় আরেক মানুষ। পেশাদার শিল্পী কাকে বলে তাকে দেখে শিখেছি।'

'বাপ্পীদা ছিলেন গান পাগল মানুষ। গান করতে এবং সুর করতে পছন্দ করতেন। এ ছাড়াও তিনি ছিলেন বিশাল মনের মানুষ। মানুষকে কাছে টেনে নেওয়ার প্রচণ্ড ক্ষমতা ছিল তার।'

'আজ সকালে তার মৃত্যুর খবর শুনে অবাক হয়ে গেছি। জানি, সবাইকে চলে যেতে হবে। কিন্তু কিছু মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। কিছুদিন আগে চলে গেলেন লতাজি। গতকাল চলে গেলেন সন্ধ্যাদি। আজ সকালে চলে গেলেন বাপ্পীদা। এইসব মৃত্যু মেনে নিতে কষ্ট হয়। বুকের ভেতরটা শূণ্যতায় হাহাকার করে।'

'তারা ছিলেন মূলত গানের প্রতিষ্ঠান। এই ৩ জনকে আমি বলব গানের নক্ষত্র। বাংলা গানের জগৎ চিরদিন তাদের স্মরণ করবে।'

'বাপ্পীদার স্ত্রীও একজন ভালো মানুষ। বৌদি আমাকে খুব আপন করে নিয়েছিলেন। তার ছেলেও সংগীতের সঙ্গে জড়িত। বাপ্পীদার বাবা অপরেশ লাহিড়ী ছিলেন বিখ্যাত শিল্পী ও সুরকার। তার বাবার সুর করা বিখ্যাত গান "হাজার বছর পরে আবার এসেছি ফিরে…"।'

'আজ খুব করে একটি কথা মনে পড়ছে। বাপ্পীদার সঙ্গে ফোনে অনেকবার কথা হয়েছে আমার, অনেক গল্প হয়েছে। তিনি আমেরিকায় একটি বাড়ি করেছেন। সেখানে বহুবার আমাকে যেতে বলেছেন, নিমন্ত্রণ করেছেন। আফসোস রয়ে গেল, বাপ্পীদার বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে কেন গেলাম না। এটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি।'

'সবশেষ তার সঙ্গে শো করেছিলাম জাপানে, পাশাপাশি হোটেলে ছিলাম। চিরচেনা হাসি দিয়ে কাছে ডেকে নিয়েছিলেন। তার হাসিমুখ মনে পড়ছে খুব।'

Comments

The Daily Star  | English

Polytechnic students issue 48-hr ultimatum over six-point demand

Threaten a long march to Dhaka if govt doesn't respond to demands

13m ago