কোন পথে এগুচ্ছে চট্টগ্রাম টেস্ট?
চট্টগ্রাম টেস্টের পাঁচদিনই বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিলো। প্রথম দুদিন এক ফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি। তৃতীয় দিনেই নামল ঢল। তাতে কি একটু মুচকি হাসছে বাংলাদেশ? আগের দিন ভাদ্রের গরমে নেতিয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়ানরা বৃষ্টির প্রশস্তি পেয়েও কি একটু অস্বস্তিতে? ম্যাচের পরিস্থিতি বলছে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। সময় নষ্ট হলেই তো মুশফিকদের লাভ। এই টেস্ট ড্র মানেই তো সিরিজ জয়। যদিও ক্রিকেটার আর সমর্থকরা চাইবেন খেলার মাঠেই হোক সব রফা।
বাংলাদেশের ৩০৫ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষেই দুই উইকেটে ২২৫ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। স্টিভেন স্মিথের পর ডেভিড ওয়ার্নার আর পিটার হ্যান্ডসকম্বের ব্যাটের দাপটে নিস্তেজ টাইগার স্কোয়াড। দ্বিতীয় দিনে শেষ বিকেলে বোলার-ফিল্ডারদের শরীরী ভাষাও ছিলো দৃষ্টিকটু। ক্যাচ পড়েছে, স্ট্যাম্পিং মিস হয়েছে। তেতে উঠার জ্বালানি না পেয়ে আলগা হয়েছে ফিল্ডিং। তাতে বড় দুই জুটিতে তরতর করে এগিয়ে গেছে সফরকারীদের রানের চাকা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে স্মিথের সঙ্গে ওয়ার্নার গড়েছেন ৯৩ রানের জুটি। তৃতীয় উইকেটে হ্যান্ডসকম্বের সঙ্গে আরও ১২৭ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন থেকে শেষ করেন দ্বিতীয় দিন।
ওয়ার্নার ১৭০ বল খেলেও চার মেরেছেন মাত্র চারটি। উইকেটের ভাষা পড়েছেন, সময় কাটিয়েছেন। ৮৮ রান তুলতে বের করেছেন প্রচুর সিঙ্গেল। বাংলাদেশকে মানসিকভাবে পিছিয়ে দিতে আর কি লাগে।
ব্যাকফুটে যাওয়া বাংলাদেশকে চাঙা করে দিতে পারে বৃষ্টির পরের সমীকরণ। বৃষ্টিতে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশন পুরোটাই ভেসে গেছে। আবহাওয়ার মতিগতি বলছে বৃষ্টির বাগড়া থাকতে পারে দিনের বাকিটা সময়। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে ৮০ রানে। হাতে ওদের ৮ উইকেট। বাকি দুই সেশন খেলা হলেও বড়সড় লিড পেতে অসিদের অন্তত চতুর্থ দিন প্রথম সেশন পর্যন্ত ইনিংস টেনে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ইনিংসে চার সেশন ব্যাট করতে পারলে অন্তত হার এড়াতে পারবে বাংলাদেশ। আর যদি অস্ট্রেলিয়াকে বড় লিড পাওয়ার আগেই অল আউট করে দিতে পারেন সাকিব-মিরাজরা, তবে তো কেল্লাফতে। ব্যাকফুটে থেকেই ম্যাচ জমিয়ে তুলবে টাইগাররা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে বুধবার সারাদিনই গোমরা থাকবে চট্টগ্রামের আকাশ। কখনো ভারি বৃষ্টি, কখনো গুড়িগুড়ি বৃষ্টির উৎপাত চলবে দিনভর। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ড্রেনেজ ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানের। ঘণ্টাখানেক রোদ থাকলেও শুরু করা যাবে খেলা। তবে রোদ-বৃষ্টি খেলা চলতে থাকলে মাঠের খেলা নির্বিঘ্নে হওয়ার সম্ভাবনা কম। তৃতীয় দিনে এক সেশনের কম খেলা হলেই ম্যাচ ড্রয়ের সম্ভবতা বেড়ে যাবে অনেক। বৃষ্টির আভাস আছে শেষ দুদিনেও।
এদিকে বৃষ্টির কারণে নাকি বদলেছে পিচের হাবভাবও। ইংল্যান্ড সিরিজের মতো অতটা টার্ন দেখা যাচ্ছে না এবার। টেস্ট শুরুর আগের কদিনের টানা বৃষ্টিতে যে পিচে রোদই যে লাগাতে পারেননি কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু। পিচের হাবভাব, ব্যাট-বলের লড়াই আর চট্টগ্রামের আকাশ। চট্টগ্রাম টেস্টের গতিপথ নির্ধারিত করতে রেষারেষি চলছে ত্রিমুখী। ম্যাচের বাকিটা সময় রোমাঞ্চ নাকি ম্যাড়ম্যাড়ে? কি পায় ক্রিকেট, দেখার আছে তা।
Comments