কোমার আগে বলতো ইংরেজি এখন বলছে স্প্যানিশ

যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টার শহরতলির কিশোর রুবেন সেমোহ ফুটবল খেলতে গিয়ে মাথায় চোট পেয়ে কোমায় চলে গিয়েছিল। এই অবস্থা থেকে বেঁচে ফিরলেও কোন বিষয়েই সে আর মনোযোগ দিতে পারছে না। তার প্রিয় খেলা ফুটবল খেলতে পারবে কি না সেটা নিয়েও তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কিন্তু হতবুদ্ধি হওয়ার মতো একটি ঘটনা ঘটেছে তার সাথে। কোমা থেকে ফেরার পর সে খুব স্পষ্ট স্প্যানিশ ভাষা বলতে শুরু করেছে যেটা সে আগে পারতো না।

সম্প্রতি সিএনএন ১৬ বছরের সেমোহকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তার বাবা-মা জানান, আগে থেকেই অল্প কিছু স্প্যানিশ জানতো সেমোহ। কিন্তু কোমায় যাওয়ার আগে পর্যন্ত সে এতো ভালো বলতে পারতো না।

তবে সেমোহ ধীরে ধীরে ইংরেজির ওপর দখল ফিরে পাচ্ছে এবং স্প্যানিশ ভুলে যাচ্ছে বলে সিনিএনএনের রিপোর্টে জানানো হয়েছে।

একটি বিরল ঘটনা

আটলান্টার এই কিশোর যে বিরল সমস্যায় ভুগছে ডাক্তারি ভাষায় এটাকে বলা হয় ফরেন এক্‌সেন্ট সিন্ড্রোম। মস্তিষ্কে আঘাত লাগার ফলে এই সমস্যা তৈরি হতে পারে। এতে মানুষের বাচনভঙ্গি পাল্টে যায়। যতদূর জানা যায় ১৯৪১ সালে নরওয়ের এক নারী প্রথম এই সমস্যায় আক্রান্ত হন। নাৎসি বাহিনীর বোমার একটি টুকরা তাঁর মাথায় আঘাত করে। আহত হওয়ার পর থেকে তিনি জার্মান ভঙ্গিতে কথা বলা শুরু করেন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত মাত্র কয়েক ডজন মানুষ ফরেন এক্‌সেন্ট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে এরকম আরেকটি ঘটনা ঘটে। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি মোটেলের বাইরে নৌবাহিনীর একজন পশু ডাক্তারকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। জ্ঞান ফেরার তিনি আগের সব স্মৃতি ভুলে শুধু সুইডিশ ভাষায় কথা বলা শুরু করেন।

ফরেন একসেন্ট সিনড্রোমের ওপর অল্প যে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন ড. কারেন ক্রুট তাদের মধ্যে একজন। তিনি এর কারণ ব্যখ্যা করতে গিয়ে সিএনএনকে জানান, “শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ওপর মস্তিষ্কের যে নিয়ন্ত্রণ থাকে সেই নিয়ন্ত্রণে নষ্ট হওয়ার ফলে এই সমস্যা তৈরি হয়।”

“আমরা যেসব কাজ করি তার মধ্যে কথা বলার প্রক্রিয়া খুবই জটিল। স্বরতন্ত্রের অনেক অংশকে নাড়ানোর মাধ্যমে কথা বলার কাজ সম্পন্ন করে মস্তিষ্ক। এর মধ্যে কোন অংশ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে স্বরে পরিবর্তন ঘটতে পারে,” বলেন ড. কারেন ক্রুট।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

US retailers lean on suppliers to absorb tariffs

Rather than absorbing the cost or immediately passing it on to consumers, many US apparel retailers and brands have turned to their suppliers in Bangladesh, demanding they share the pain

4h ago