গণহত্যার দায়ে গণ-আদালতে অভিযুক্ত মিয়ানমার সরকার

Permanent Peoples Tribunal
২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে আয়োজিত আন্তর্জাতিক গণ-আদালত বা পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনালের রায়ে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান গণহত্যার দায়ে মিয়ানমার সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়। ছবি: দ্য স্টার/ এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান গণহত্যার দায়ে দেশটির সরকারকে অভিযুক্ত করেছে আন্তর্জাতিক গণ-আদালত বা পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল।

সাত সদস্য বিশিষ্ট এই আদালত বিভিন্ন নথি ও নির্যাতনের শিকার ২০০ জনের দেওয়া তথ্য ভিত্তিতে আজ (২২ সেপ্টেম্বর) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে এ রায় দেন। আদালতে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা, কাচিন ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর দেশটির সরকার পরিচালিত নির্যাতনের বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়।

মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে আর্জেন্টিনার সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ এর প্রতিষ্ঠাতা ও গণ আদালতের প্রধান বিচারক দানিয়েল ফিয়েরেস্তেইন রায় পড়ে শোনান।

তিনি বলেন, “মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আদালত এই মর্মে রায় দিচ্ছে যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা, কাচিন এবং অন্যান্য মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে।”

এছাড়াও, এই রায়ের সঙ্গে আদালতের পক্ষ থেকে ১৭টি সুপারিশ করা হয়েছে। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে যে মিয়ানমার সরকারকে দেশটির মুসলমান সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও, জাতিসংঘের তদন্ত দলকে ভিসা ও সহজে প্রবেশাধিকার দিতে হবে।

সুপারিশে আরও বলা হয় যে মিয়ানমার সরকারকে দেশটির সংবিধান সংশোধন এবং পক্ষপাতমূলক আইন তুলে নিতে হবে। নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের অধিকার ও নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করার কথাও এতে বলা হয়েছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়াতে মানবিক সাহায্য পাঠানোর অনুরোধও করা হয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে। গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত চার লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমারে গণহত্যা ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

উল্লেখ্য, পারমানেন্ট পিপলস ট্রাইব্যুনাল ১৯৭৯ সালে ইতালিতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন বিষয়ে ৪৩টি অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে।

Comments