দার্জিলিংয়ে সোমবার থেকে লাগাতার হরতাল
পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে লাগাতার হরতালের কর্মসূচি দিয়েছে গোর্খা জন মুক্তি মোর্চা। পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকারের দমন ও নিপীড়নের প্রতিবাদে এই কর্মসূচী দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্দোলনকারী মোর্চা নেতৃত্ব।
মোর্চার ঘোষণায় বলা হয়, সোমবার (১২ জুন) থেকে থেকে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে কেন্দ্রীয়, রাজ্য সরকারের সব অফিস, গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন (জিটিএ) দফতর, ব্যাংক এবং ডাকঘর হরতালের আওতায় থাকবে। তবে হরতালের বাইরে রাখা হয়েছে স্থানীয় দোকান-বাজার এবং পর্যটকদের থাকার হোটেল এবং তাদের ব্যবহার করা স্থানীয় পরিবহনও।
শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত প্রায় ৮ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠক শেষে পার্বত্য অঞ্চলের তড়াই, ডুয়ার্স, মিরিক, কার্শিয়াং, কালিংপঙ এবং দার্জিলিংয়ে নেপালি ও ইংরেজি ভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষায় সাইনবোর্ড লাগানো যাবে না বলেও ঘোষণা করেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি।
আরো পড়ুন: দার্জিলিং অশান্ত, আটকে পড়েছেন ৫০ হাজার পর্যটক
মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শনিবার সন্ধ্যায় দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফিরেছেন। মোর্চার ডাকা হরতালের কর্মসূচি নিয়ে আরো কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মমতা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের নেতা গৌতম দেব জানিয়েছেন, মানুষের দুর্ভোগ ঘটানোর জন্য এমন লাগাতার হরতালের ডাক দিয়েছে মোর্চা। পাহাড় ও সমতলের মানুষ মিলে এই হরতালের বিরুদ্ধে তারা মাঠে থাকবেন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মন্ত্রিসভার বৈঠকের বাইরে মোর্চা সদস্যদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। মোর্চা সদস্যরা পুলিশের ১৫টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। পুলিশও দফায় দফায় লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। এর প্রতিবাদে পরদিন শুক্রবার ১২ ঘণ্টার হরতাল পালন করে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকারীরা।
অশান্ত পাহাড় থেকে বৃহস্পতিবার থেকেই হাজার হাজার পর্যটক সমতলে নামতে শুরু করেছেন। তবে শনিবার কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থা দেখে অনেকে পার্বত্য অঞ্চলে নতুন করে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার থেকে লাগাতার হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ায় ভরা মৌসুমেও পার্বত্য অঞ্চলে অবকাশ যাপন বাদ দিতেই বাধ্য হচ্ছেন পাহাড় প্রিয় পর্যটকরা।
Comments