দেশে ফিরেছে ভারতে আটক ৬ বাংলাদেশি কিশোর

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট মহকুমায় শিশু-কিশোরদের আশ্রয় কেন্দ্র “শুভয়ান হোম”-এ আটক থাকা ছয় বাংলাদেশি কিশোরকে বুধবার (২ আগস্ট) সকালে হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে নিজেদের পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তবে এখনও বালুরঘাটে সরকারি হোম শুভায়নে কূটনৈতিক জটিলতার কারণে আটকে রয়েছে বাংলাদেশি ৩০ কিশোর। সীমান্ত অতিক্রম করা ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ নেই।
ভারত-বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি আইনে কোনও শিশুর বিরুদ্ধে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধ ছাড়া অন্য কোনও অপরাধ না থাকলে ৬০ দিনের মধ্যেই নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে যৌথ টাস্কফোর্স।
কিন্তু শুভায়ন হোমসহ পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হোমগুলোতে আটক প্রায় শতাধিক বাংলাদেশি শিশু-কিশোর শুধুমাত্র নাগরিকত্ব প্রমাণে দেরি হওয়ায় বছরের পর বছর আটকে থাকছে। ফলে তাদের মানসিক বিকাশে বড় ধরণের ধাক্কা লাগছে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা চাইল্ডলাইন সমন্বয়ক সরোজ দাস টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “হিলি সীমান্ত দিয়ে নিজের দেশে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া কিশোররা প্রত্যেকেই এক থেকে দেড় বছর আগে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে ধরা পড়েছিল। আদালতের মাধ্যমে তাদের শুভায়ন হোমে রাখা হয়।”
নাগরিকত্ব সনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার জেরে এখনও শুভায়ন হোমে ৩০ জন বাংলাদেশি শিশু আটকে রয়েছে। তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে ভারত সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এমন কথাও যুক্ত করেন সরোজ দাস।
শুভয়ান হোমের কর্মকর্তা পরেশ হাজারা জানান, গত দুই বছরে ৩৯ জন নাবালককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে গত তিন মাসে সাত শিশু আটক হয়ে হোমের নতুন আবাসিক হয়েছে।
ভারতীয় হিলি সীমান্তের ওসি নাজির হোসেন টেলিফোনে জানান, নাজমুল হক, সোহান শেখ, মুন্না শেখ, সাগর চন্দ্র রায় এবং আব্দুর রহমান নামের ছয় কিশোরকে ২ আগস্ট তাদের বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ফরিদপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম মূলত এই তিন জেলার বাসিন্দা এই কিশোররা কেউ কাজের সন্ধানে, আবার কেউ বেড়াতে এসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
গত বছর ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা শুভয়ান হোমের ৪৩ জন শিশুর খোলা চিঠি দেশ জুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই চিঠি লেখা নাবালকদের মধ্যে এখনও দশ জন শুভায়ন হোমেই আটকে রয়েছে।
এই ব্যাপারে কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বি এম জামাল হোসেন বলেন, “নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার যে প্রক্রিয়া সেটি নিয়মমাফিক সারা বছর ধরেই করে থাকে উপদূতাবাস। শুভায়নের আটক শিশুদের অনেকেই চলে গিয়েছে। নাগরিকত্ব নিশ্চিত হলে বাকিদেরও পাঠানো হবে।”
Comments