নক্ষত্রের চেয়েও উত্তপ্ত যে গ্রহ

প্রবাদ রয়েছে সূর্যের চেয়ে বালি গরম। তবে নক্ষত্রের চেয়ে গ্রহ উত্তপ্ত, এটি কোনো প্রবাদ নয়। বাস্তবেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন যা কিনা অনেক নক্ষত্রের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত।
নাসার এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তপ্ত সেই গ্রহটি দেখতে অনেকটাই আমাদের সৌরমণ্ডলের বৃহস্পতি গ্রহের মতো। কিন্তু দেখতে একরকম হলে হবে কি, কেইএলটি-নাইনবি নামের এই গ্রহটিতে দিনের বেলায় তাপমাত্রা থাকে ৭,৮০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট যেখানে বৃহস্পতি-পৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা মাত্র ২৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিদ্যার অধ্যাপক স্কট গৌড়ি জানান, আমাদের বৃহস্পতির মতই ওই দানবাকৃর্তির গ্রহটিও গ্যাসে পরিপূর্ণ। তবে পার্থক্য হলো ওই গ্যাস ভীষণ গরম।
সম্প্রতি, টেক্সাসে অনুষ্ঠিত আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির গ্রীষ্মকালীন বৈঠকে এবং নেচার ম্যাগাজিনে এই অস্বাভাবিক গ্রহটির প্রসঙ্গ এসেছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, কেইএলটি-নাইনবি গ্রহটি বৃহস্পতির চেয়ে কম করে হলেও তিনগুণ বড়। কিন্তু মাটির ঘনত্ব অর্ধেকেরও কম। যে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে এটি ঘুরছে তার প্রচণ্ড তেজস্ক্রিয় রশ্মি গ্রহটিকে বেলুনের মতো ফুলিয়ে রেখেছে।
অধ্যাপক গৌড়ি বলেন, গ্রহের স্বাভাবিক সংজ্ঞা অনুযায়ী একে গ্রহ বলা যেতে পারে। তবে এমন উত্তপ্ত গ্রহ এর আগে কখনো দেখা যায়নি। আমাদের সময়ের হিসাবে মাত্র দেড় দিনে এটি তার নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই গ্রহের নক্ষত্রটির বয়স মাত্র ৩০০ মিলিয়ন বছর। অন্যান্য নক্ষত্রের বয়স বিবেচনায় এটি নিতান্তই তরুণ। আমাদের সূর্যের চেয়ে এটি দ্বিগুণ বড় এবং তাপমাত্রাও দ্বিগুণ।
এই নক্ষত্র থেকে বের হওয়া অতি শক্তিশালী অতিবেগুনী রশ্মি গ্রহটির বায়ুমণ্ডলকে ঝাঁঝরা করে চলেছে। তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রভাবে গ্রহটির বিভিন্ন উপাদান বাষ্প হয়ে উবে যাচ্ছে। এভাবে গ্রহটি ধীরে ধীরে তার নিজের অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলছে।
গৌড়ির গবেষণা দলের একজন সদস্য কিভান স্টাসুন বলেন, “প্রতি মুহূর্তে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে একদিন এ গ্রহটি মহাকাশের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।”
Comments