নিজের ‘শেষ রক্ষা’ করতে পারলেন না ভারতের সেই বিচারপতি

​যার নির্দেশে রক্ষা পেতেন ভুক্তভোগীরা সেই তিনিই নিজের শেষ রক্ষা করতে না পেরে এখন শ্রীঘরে। বেশ কিছুদিন পুলিশের চোখে ধুলো দিতে সক্ষম হলেও তামিলনাড়ুর কোয়াম্বেটর বিমানবন্দরে গোয়েন্দাদের নজরে পড়ে গ্রেফতার হলেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস কে কারনান। পুরো নাম চিন্নাস্বামী কারনান।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সি এস কারনান

যার নির্দেশে রক্ষা পেতেন ভুক্তভোগীরা সেই তিনিই নিজের শেষ রক্ষা করতে না পেরে এখন শ্রীঘরে। বেশ কিছুদিন পুলিশের চোখে ধুলো দিতে সক্ষম হলেও তামিলনাড়ুর কোয়াম্বেটর বিমানবন্দরে গোয়েন্দাদের নজরে পড়ে গ্রেফতার হলেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এস কে কারনান। পুরো নাম চিন্নাস্বামী কারনান।

নিজের উদ্ভট কর্মকাণ্ডের জন্য দেশ বিদেশে তুমুল আলোচিত ওই বিচারপতিকে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত ৯ মে আদালত অবমাননার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

দণ্ড ঘোষণার পর প্রায় দেড় মাস গোয়েন্দাদের নজর এগিয়ে বেড়াচ্ছিলেন উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতের অলিগলি। কালো কাঁচে ঘেরা গাড়িতে চড়ে ঘুরলেও গতকাল মঙ্গলবার বিমানবন্দরে পৌঁছনোর সময়ই গ্রেফতার হন কারনান।

মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি থাকার সময় এ বছরের জানুয়ারি মাসে এস কে কারনান ২০ জন বিচারপতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত দাবি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছে ওই বিচারপতিদের নিয়ে অভিযোগ পাঠান। এখান থেকেই ঘটনার শুরু। এরপরই তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে বদলি করে কলকাতা হাইকোর্টে আনা হয়। নিজের বদলির বিরুদ্ধে নিজেই স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর তাকে নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে।

বিচারপতির কারনান এখানেই থামেননি। সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে আইনি অস্ত্র শানান তিনি। আর সে কারণেই ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট তার বৈচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন। এর পরও নিজের বাড়িতে বিশেষ আদালত বসিয়ে প্রায় প্রতিদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে নিজেই বিভিন্ন রায় শোনাতেন তিনি।

ভারতীয় গণমাধ্যম সহ দেশ বিদেশের বহু গণমাধ্যমে এস কে কারনানের এমন রায়ের খবর প্রকাশিত হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি আমলে আনেন। ওই বিচারপতিকে গ্রেফতারের পাশাপাশি আগামীতে বিচারপতি কারনানের কোনো খবরকে গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য ভারতীয় গণমাধ্যমের জন্য নিয়ম বেধে দেন প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে গঠন করা সাত বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

কলকাতার রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজ কানোজিয়ায়ার ওপর এস কে কারনানকে গ্রেফতার করে আদালতের সোপর্দ করার নির্দেশ দিয়ে হুলিয়া জারি করেন ভারতের শীর্ষ আদালত। এর পরই কলকাতার নিউটাউনের বাড়ি থেকে আচমকা উধাও হয়ে যান তিনি। যদিও তার আইনজীবীর মাধ্যমে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন জায়গায় গ্রেফতার এড়াতে নানা কৌশল অবিষ্কারের চেষ্টা চালান।

কলকাতা হাইকোর্টের ইতিহাসে এস কে কারনান দ্বিতীয় বিচারপতির যিনি গ্রেফতার হলেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে বিচারপতি অজিত সেনগুপ্ত অবসর নেওযার দুই বছর পর গ্রেফতার হয়েছিলেন। যদিও বিচারপতির কারনান অবসর নেওয়ার প্রায় এক মাস আগে ৯ মে গ্রেফতারের নির্দেশ পান এবং দণ্ডিত হন। 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago