প্রণবকে ‘ভাপা ইলিশ’ রান্না করে খাওয়ালেন হাসিনা
আতিথেয়তায় বাঙালি সেরা- ফের প্রমাণ হল। ঢাকা হোক বা দিল্লি বাঙালি যেখানেই পা দেবেন অতিথি সেবাই পরম ধর্ম; সে ধর্ম পালনেরই চেষ্টা থাকে, রক্তে-মজ্জায়।
এবারও তাই হলো, তিস্তা চুক্তি হোক বা নাই হোক এই যাত্রায়। গুরুত্বপূর্ণ অনেক চুক্তি ও সহযোগিতা পাওয়া গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তব্যে মোদি স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি তাঁর নিজের দেশের কাছেও অনুপ্রেরণার।
কিন্তু শনিবার দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবন সাক্ষী থাকলো এক নজিরবিহীন ঘটনার, যা ইতিহাস হয়ে থাকবে ৩৪০ কক্ষের ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের হেঁসেলে। প্রধানমন্ত্রী হাসিনার শুধু ভারত সফরে নয়, এই ধরণের ঘটনা আর দ্বিতীয়টি হয়েছে বলে এখনও কারো জানা নেই।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে রান্না করে খাইয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছয় জন রাঁধুনি নিয়ে এসেছেন এই সফরে। শনিবার তারাই ইলিশের তিন রকম পদ রান্না করেছেন। কিন্তু ভাপা ইলিশ রান্নার সময় বঙ্গবন্ধু কন্যা নিজেই হাত লাগান- ভারতের বহুল প্রচারিত টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা দৈনিক ‘এই সময়’ রবিবার তাদের প্রিন্ট সংস্করণে এই খবর প্রকাশিত হয়।
খবরে বলা হয়, শুধু প্রণব মুখার্জিকেই ইলিশ ভাপা খাওয়াননি হাসিনা বরং মমতা ব্যানর্জির জন্য রেঁধেছিলেন। কিন্তু মমতা রাতের খাবার এতো তাড়াতাড়ি গ্রহণ করেন না বলে সেখানে শুধু মুড়ি-বাতাসা খেয়েই ফিরে আসেন।
ইলিশ ভাপা রান্নার প্রশ্নে ওই খবরে বলা হয়, ‘প্রণব মুখার্জিকে বরাবরই বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করেন হাসিনা। রাষ্ট্রপতির বাঙালি স্ত্রীর সঙ্গেও হাসিনার মধুর সম্পর্ক ছিল। রাষ্ট্রপতি ভবনেই হাসিনা অতিথি হিসাবে রয়েছেন। আর সেখানেই তিনি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন’।
রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির জন্য ঢাকাই মসলিনের পাঞ্জাবি, মমতার জন্যও ছিল হাসিনার উপহার ঢাকাই জামদানী- এই সময়ের খবরে এটাও উল্লেখ করা হয়।
শনিবার রাতে হাসিনার রান্নায় নৈশভোজের আগে মমতা ব্যানার্জিও হাসিনাকে কলকাতার বিখ্যাত মিষ্টিঘর রাধামন মল্লিকের মিষ্টি ও শাল উপহার দেন।
পত্রিকাটি লিখেছে, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে দেওয়া মধ্যাহ্নভোজে ছিল হরেক রকম পদ। লুচি, ছোলার ডাল, পোলাও, পাবদা, ভেটকি, গলদা চিংড়ি মালাইকারি, মুরগির মাংস, মিষ্টি দই এবং রসগোল্লা। আর ছিল বাংলার প্রসিদ্ধ গন্ধরাজ লেবু। মোদি জানতেন গন্ধরাজ লেবু হাসিনার খুবই প্রিয়। তাই একই টেবিলে প্রধানমন্ত্রী মোদি, হাসিনা, মমতা। একটু দূরে অন্য একটি টেবিলে বসেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত বসু, কেন্দ্রী প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং বিজেপি সাংসদ রুপা গঙ্গোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নিজেই সাদরে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়ে মমতাকে হাসিনার সঙ্গে একই টেবিলে বসান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সৌগত বসুর বাবা শিশির বসুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্র ধরে সৌগত বসুর মা প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসুর শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চান হাসিনা।
Comments