ফলোঅন এড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ?

দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলা আগের চার টেস্টেই বাংলাদেশের ছিলো ইনিংস হার। সবশেষটা ২০০৮ সালে। তখনকার বাংলাদেশ ছিলো নড়বড়ে, জোড়াতালি দেওয়া। দেশের মাঠে মাত্র অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উড়ে যাওয়া বর্তমান দলটি তো তেমন নয়। তবু পচেফস্ট্রম টেস্টের পরিস্থিতি নিয়ে যাচ্ছে নয় বছর আগে। সেই আগের দলটার জায়গায়। টেস্টের প্রথম দুই দিন শেষে চোখের সামনে ফলোঅনে পড়ার শঙ্কা। লিড নেওয়া দূরে থাক। ফলোঅন এড়াতেই যে এখনো বাকি ১৬৯ রান! পারবে তো বাংলাদেশ?
হ্যাঁ, ফর্মের তুঙ্গে থাকা সাকিব আল হাসান নেই। তবুও কি পচেফস্ট্রমে প্রথম দুদিনের পারফরম্যান্সের বেহাল দশা মেনে নেওয়া যায়? শুরুটাই হলো বড্ড গোলমেলে। শুকনো উইকেটে ব্যাট নিতে হাত নিশপিশ করবে যেকোন অধিনায়কের। অথচ, বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম কিনা তা তুলে দিলেন স্বাগতিকদের হাতে।
তিন উইকেটে ৪৯৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। চাইলে যেন ব্যাট করতে পারত পাঁচদিনই। প্রথম দিন শেষে সাব্বির রহমান যেমন বলছিলেন, “যেভাবে আমরা বল করছি তারা হাজার রানও করে ফেলতে পারে।” এক হাজার করে ম্যাচ ড্র করার মতো আহাম্মক নন ফাফ দু প্লেসি। বরং দ্বিতীয় দিনের চা বিরতিতে গিয়ে তিনি যেমন চালাকি করলেন তাতে আরও ভড়কে গেল বাংলাদেশ। বিরতির আগে টেন্ডা বাভুমাকে নিয়ে ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন দু প্লেসি। ইনিংস ঘোষণার কোন তাড়া ছিলো না তাদের হাবভাবে। দ্বিতীয় সেশনে ৪৯ মিনিট মাঠে ফিল্ডিংয়ে ছিলেন না তামিম ইকবাল। প্লেসি খেয়াল করেছেন সেটি। নিয়ম অনুযায়ী পরের ঠিক ৪৯ মিনিট ব্যাট করতে পারতেন না তামিম। আচমকা ইনিংস ঘোষণা করে তামিমকে ফেলে দিয়েছেন বিপাকে। বেচারা লিটন দাসকে ১৪৬ ওভার উইকেট কিপিং করে নামতে হয়েছে ব্যাট হাতে।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজে চট্টগ্রাম টেস্টে ১২০ ওভার উইকেট কিপিং করেও চার নম্বরে নামেননি অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অথচ, পচেফস্ট্রমে পরিস্থিতির দাবি মেটাতে কোরবান লিটন দাস। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত ওপেনার লিটন শুরুটা ভালোই করেছিলেন। তিনি ২৫ রান করে কাটা পড়েন অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে। ব্যর্থতার ষোলকলা পুরো করা ইমরুল ফিরেছিলেন আগেই। ওয়ানডে স্টাইলে ৫৭ বলে ৪৪ করে দায়িত্ব সেরেছেন মুশফিকও।
ওয়ানডাউনে নেমে দৃঢ়তা দেখিয়ে চলেছেন মুমিনুল হক। তিনি ৬৪ বলে ২৮ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। জীবনে প্রথমবারের মতো পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামা তামিম ইকবাল অপরাজিত আছেন ২২ রান করে। এই দুজনের উপর ফলোঅন এড়ানোর মূল ভার। মাহমুদুল্লাহ, সাব্বির রহমান আছেন বটে। তবে তৃতীয় দিনে দ্রুত উইকেট হারালে মরকেল, রাবাদার পেসের ঝাঁজ সামলানো বড্ড কঠিন হবে লোয়ার অর্ডারের জন্য।
যদিও দ্বিতীয় দিন শেষে দলের হয়ে তাসকিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ফলোঅন নিয়ে তারা ভাবছেনই না, হার নিয়েও নয়। জিততে না পারলে ড্র তারা করবেনই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: (দ্বিতীয় দিন শেষে)
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৪৬ ওভারে ৪৯৬/৩ ইনিংস ঘোষণা (এলগার ১৯৯, মারক্রাম ৯৭, আমলা ১৩৭, বাভুমা ৩১*, দু প্লেসি ২৬*; মুস্তাফিজ ১/৯৮, শফিউল ১/৭৪, মিরাজ ০/১৭৮, তাসকিন ০/৮৮, মাহমুদউল্লাহ ০/২৪, মুমিনুল ০/১৫, সাব্বির ০/১৫)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৪ ওভারে ১২৭/৩ (লিটন ২৫, ইমরুল ৭, মুমিনুল ২৮*, মুশফিক ৪৪, তামিম ২২*; মর্কেল ১/৩৪, রাবাদা ১/২৩, মহারাজ ১/৩৮, অলিভিয়ের ০/২৭, ফেহলুকওয়ায়ো ০/৪)
Comments