‘দুর্ভাগা ইমরুল’
টেস্টে এখন পর্যন্ত ২৫টি আলাদা উদ্বোধনী জুটি খেলিয়েছে বাংলাদেশ। তাতে সবচেয়ে সফল তামিম ইকবাল আর ইমরুল কায়েস। ৪৮ ইনিংস খেলে এই জুটি করেছে ২২০৫ রান। গড়টা ৪৭.৩৯। বেশ তরতাজাই বলতে হবে। প্রাধান্য হয়ত তামিমেরই বেশি, তবে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে গেছেন ইমরুল। পরিস্থিতির ফেরে এখন ওপেনিংয়ে জায়গাই নেই ইমরুলের। অধিনায়ক মুশফিকের কাছে তাই ইমরুল কায়েস “দুর্ভাগা”।
সংবাদ সম্মেলনে ইমরুলের প্রসঙ্গ উঠতেই মুশফিক বললেন, “ওর জন্য খারাপ লাগে আসলে। নয় বছর খেলার পর এখনও সে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি বলবো ও একটু দুর্ভাগা। অনেক সময় টিম কম্বিনেশন বা পরিস্থিতির কারণে পছন্দ না হলেও পরিবর্তন আনতে হয়। তবে সে অসাধারণ খেলোয়াড়। আশা করি, এই সিরিজেও দারুণ কিছু করবে সে।”
ইমরুল খারাপ খেলায় ওপেনিংয়ে জায়গা হারাননি, তা তো মুশফিকের কথাতেও পরিষ্কার। ওয়েলিংটন টেস্টে ফিল্ডিংয়ে ডাইভ দিতে গিয়ে চোট পেয়েছিলেন তিনি। সেই সুযোগে দলে এসে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন সৌম্য সরকার। গেল চার টেস্টে তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন এই বাঁহাতি। আট ইনিংসে ৪৬.৮৭ গড়ে ৩৭৫ রান করেছে এই জুটি। এই সময়ে ব্যক্তিগত মুন্সিয়ানা দিয়েও আলোয় থেকেছেন সৌম্য। শেষ চার টেস্টে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে চার ফিফটি। ইমরুলের জায়গা তাই নেমে যায় একধাপ।
সেই ২০০৮ সালে অভিষেক ইমরুলের। দলে থাকা না থাকার টানাপোড়নে খেলতে পেরেছেন মাত্র ২৮ টেস্ট। তাতে ২৮.১৯ গড়ে ১৪৬৬ রান তাঁর। তবে যদি শেষ তিন বছরের পরিসংখ্যান সামনে আনা হয় তাতে ৯ টেস্টে ৪২.৭১ গড়ে ৫৯৮ রান করেছেন মেহেরপুরের ছেলে ইমরুল। এই পরিসংখ্যান জানা আছে অধিনায়কেরও। তাঁর হয়ে তাই ব্যাট করলেন তিনি, “গত ইংল্যান্ড সিরিজেও খুব ভালো ব্যাটিং করেছে সে। আর তিন নম্বরে সে সুযোগ পেলে দারুণ কিছু করবে। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে সে ভালো খেলে এসেছে।”
তবে ওপেনিংয়ে জায়গা নেই ইমরুলের। তাঁকে খেলতে হলে তিন নম্বরেই খেলতে হবে – সে ইঙ্গিত পরিষ্কার মুশফিকের কথাতেও। তিন নম্বরে ৬ ইনিংস ব্যাট করে ৩৪.৬৬ গড়ে করেছেন ২০৮ রান। যা তাঁর ক্যারিয়ার গড় থেকে বেশি। তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের হয়ে যেকোনো পজিশনে খেলতেই প্রস্তুত, তবে ওপেনিংই যে প্রিয় পজিশন লুকাননি সেটিও।
এদিকে, দলে ফিরেছেন মুমিনুল হক। তাঁকে একাদশেও ফেরানো হতে পারে। মুমিনুল একাদশে ফিরলে সম্ভাব্য বাদ পড়ার তালিকায় উপরের নাম হবে ইমরুল কায়েস। আগের বারও যেমন, এবার ঠিক পারফর্মেন্সের কারণে নয়। ইমরুলকে বাইরে থাকতে হতে পারে আরেকটি পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। তাঁর দুর্ভাগাই বটে!
Comments