ধর্মগুরু রাম রহিম সিং ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত

ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানায় সংঘর্ষে ৩২ জন নিহত

ভারতে ধর্ষণের মামলায় বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিম সিং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সহিংস হয়ে ওঠে তার ভক্তরা। ছবি: এএফপি

দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের মামলায় বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিম সিং দোষী সাব্যস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে ৩২ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।

খবরে প্রকাশ, হরিয়ানার আদালত চত্বরের হামলা চালিয়েছে তাঁর ভক্তরা। বেশ কয়েকটি স্টেশনে হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পরিস্থিতি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

আজ (২৫ আগস্ট) হরিয়ানার পাঁচকুলার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতেই ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দোষী সাব্যস্ত হন গুরুমিত রাম রহিম সিং। আগামী সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারক সাজা ঘোষণা করবেন। ১৯৯৯ সালের ধর্ষণের ঘটনায় ২০০২ সালে সিবিআইয়ের কাছে এই মামলা হয়েছিল।

আদালতের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরপরই ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে সর্তকতা জারি করে প্রশাসন। অশান্তি এড়াতে আদালত থেকে ইতোমধ্যে সেনা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে রাম রহিম সিংকে।

হরিয়ানার পাঁচকুলার আদালতের আশপাশের এলাকায় গত দুদিন ধরে রাজ্য সরকার ১৪৪ ধারা জারি করেছে। রায় ঘোষণার পর সেখানে হরিয়ানার বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রেখেছে প্রশাসন। এমন কি রাজস্থানের কয়েকটি গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে।

স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় এর আগেও রাম রহিমের লক্ষ লক্ষ ভক্ত বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছিলেন। এর মধ্যে আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করলেন। আর সে কারণেই প্রশাসন এই ঘটনায় ভক্তরা উত্তেজিত হয়ে যে কোনও অঘটন ঘটাতে পারেন, সেটা প্রায় নিশ্চিত রয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

কদিন আগে পুলিশের কনভয় থেকে গুরমিত সিংকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে - এমন হুমকিও এসেছিলো। সে কারণে শুক্রবার পাঁচকুলার বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। নিরাপত্তায় নিয়োজিত করা হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীকেও, যা কিনা বিরল ঘটনা।

ধর্ষণ মামলার রায়ের পরই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখতে হরিয়ানা ও পাঞ্জাবের কয়েকটি গ্রামে ৫৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী এবং ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর জেলার গুরুসর মোদিয়া গ্রামের জন্মগ্রহণ করেন গুরমিত। যদিও তাঁর ছোটবেলার নাম ছিল মিতা। ১৯৯০ সালে হরিয়ানার সিরসা শহরে ডেরা সাচা সৌদার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

প্রথম দিকে অত্যন্ত সাদামাটা ভাবমূর্তিতেই চলাফেরা করতেন তিনি। কিন্তু ১৯৯৩ সালের পরই তাঁর পোশাকে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। নিজেকে সব ধর্মের সমন্বয়ক বলে প্রচার করতে শুরু করেন তিনি। কয়েকটি চলচ্চিত্র ছাড়াও তাঁর বেশ কিছু গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। দেশ-বিদেশে তাঁর হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। এমন কি তিনি ব্যক্তিগত বিমান ছাড়া কোনও বিমানে চড়েন না। ভারতে তাঁকে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হয়।

ভারতীয় রেলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ধর্ষণ মামলা রায় বের হওয়ায় পাঞ্জাব ও হরিয়ানার সঙ্গে বেশ কিছু রেল বাতিল করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Students to resist AL event today

The student movement against discrimination will hold a mass gathering at Zero Point in the capital’s Gulistan today, demanding trial of the Awami League.

3h ago