যেন ছদ্মবেশী ওয়ার্নার!
চট্টগ্রাম টেস্টে চেনাই যাচ্ছে না ডেভিড ওয়ার্নারকে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসেই যেন পালটে ফেলেছেন ভোল। আগ্রাসী ব্যাটসম্যান হয়ে গেছেন খোলশবন্দি । মিল হলো আগ্রাসী হয়েও ঢাকায় করেছিলেন সেঞ্চুরি। জড়সড় হয়ে খেলেও চট্টগ্রামেও করলেন তাই। এশিয়ায় আগে কখনো সেঞ্চুরি না পাওয়া ওয়ার্নার তুলে নিলেন ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি। এই সিরিজে ব্যাটের দাপটে বেশ ভালোই ভুগছে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টির রমরমা যুগে ওয়ার্নারের কদর বিশ্বজোড়া। বলকে ইচ্ছে মতো পিটিয়ে ছাতু বানান। রঙিন পোশাকে বটেই, সাদা পোশাকেও থাকে একই রুন্দ্রমূর্তি। ঢাকায় প্রথম টেস্টে ১২১ বলে সেঞ্চুরি পাওয়া ওয়ার্নার চট্টগ্রামে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছালেন ২১০ বলে! মেরেছেন মাত্র পাঁচটি চার। ঢাকায় ১১২ রানের ইনিংসে চার মেরেছিলেন ১৬টি, ছক্কাও ছিলো একটি। এবার সেঞ্চুরিতে গেলেন ৫০ এর নিচে স্ট্রাইক রেট নিয়ে। অথচ তাঁর ক্যারিয়ার স্ট্রাইকরেট ৮০ ছুঁইছুঁই।
মিরপুরের পিচে টার্ন ছিলো অনেক বেশি। অসমান বাউন্সে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ছিলো দুরূহ। অমন পিচে নাকি ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকাই মুশকিল। তাই মেরেই করতে চেয়েছেন রান। হয়েছিলেন সফলও। তবু দলকে জেতাতে পারেননি।
বাংলাদেশের কাছে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিলো ২০ রানে। ব্যক্তিগত খেল দেখানোর পরও ওই হারই হয়ে গেছে দগদগে ঘা। অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ায় হইচই পড়ে গেছে। বেতন-ভাতা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে বিরোধে সহ-অধিনায়ক ওয়ার্নারই ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। সে তাগিদেই কিনা রূপ বদল!
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পিচেও টার্ন আশা করেছিলো স্বাগতিকরা। বৃষ্টির কারণে কিউরেটর পিচে যথেষ্ট ঘূর্ণি আনার সময় পাননি। ওই পিচে টিকে থাকলে রান আসে। ওয়ার্নার বুঝে নিয়েছেন পিচের ভাষা। উইকেটে কাটিয়েছেন সময়। খোলসবন্দি করে এক এক করে এগিয়েছেন। তাতে অস্ট্রেলিয়া পেয়ে যাচ্ছে শক্ত ভীত।
তবে ওয়ার্নারের এই লড়াই থামিয়ে দিতে অন্তত দুবার সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে ৫২ রানের সময় সিলি মিড অনে তাঁর ক্যাচ নিয়েও ফেলে দেন মুমিনুল হক। ৭৩ রানের সময় সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। মেহেদী হাসান মিরাজে বলে ডাউন দ্যা উইকেটে এসে বল মিস করেছিলেন তিনি। অনেক সময় পেয়েও স্ট্যাম্পিং করতে পারেননি মুশফিক।
শেষ পর্যন্ত ২৩৪ বলে ১২৩ রান করে আউট হয়েছেন ওয়ার্নার। পুরো ইনিংসে তাঁর বাউন্ডারি এসেছে মাত্র ৭টি। ক্যারিয়ারে ওয়ার্নারের এটি ২০তম সেঞ্চুরি। আইপিএলের টিমমেট ওয়ার্নারকে আউট করে বাংলাদেশকে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
Comments