রোহিঙ্গাদের জন্যে তৈরি হচ্ছে ১০,০০০ ল্যাট্রিন
কক্সবাজার জেলায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে এবং ক্রমবর্ধমান স্যানিটেশন সমস্যার দ্রুত সমাধান প্রদানে আজ (১১ অক্টোবর) রাজধানীতে বাংলাদেশে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফের মধ্যে একটি কর্ম-পরিকল্পনা স্বাক্ষর করা হয়েছে।
ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কর্ম-পরিকল্পনার আওতায় শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে পানিবাহিত রোগবালাই বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি ঠেকাতে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১০,০০০ ল্যাট্রিন নির্মাণে অর্থায়ন করবে ইউনিসেফ।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মাদ হাবিবুল কবির চৌধুরী এবং ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার নিজ নিজ পক্ষে কর্ম পরিকল্পনাটি সই করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই ১০,০০০ ল্যাট্রিন প্রায় ২৫০,০০০ মানুষকে স্যানিটেশন সুবিধা দেবে। আর প্রতিটি ল্যাট্রিন নির্মাণে খরচ হবে আনুমানিক ১১,৮০০ টাকা (প্রায় ১৪৭ মার্কিন ডলার) এবং ১০,০০০ ল্যাট্রিনের মোট নির্মাণ ব্যয় হবে ১.৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই নির্মাণ কাজটি ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে শেষ করবে।
ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার বলেন, “ক্যাম্পগুলোর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এরই মধ্যে লোকজনের পানিবাহিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ফলে, ক্যাম্পগুলোর বাসিন্দা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বর্তমানে রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাবই প্রকৃত বিপদ। সেখানে স্যানিটেশনের ব্যাপ্তি বাড়াতে আমাদের অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এই প্রচেষ্টায় ইউনিসেফ ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক সহায়তার পাশাপাশি কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ইউনিসেফ এবং এর পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতের সহযোগীরা প্রতিটি পাঁচ-রিং সম্বলিত ল্যাট্রিন নির্মাণের স্থান নির্বাচন করে দেবে। এই ল্যাট্রিনগুলো যাতে দূষণের উৎসে পরিণত না হয় সেজন্য নিয়মিত ক্লোরিন ছিটানোর মাধ্যমে এগুলোকে জীবাণুমুক্ত করা হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া বলেন, “এই ব্যাপক জনস্বাস্থ্যমূলক উদ্যোগে আমাদের সহায়তা করার জন্য ইউনিসেফ বাংলাদেশকে ধন্যবাদ। সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এই কাজ বাস্তবায়ন করতে যা দরকার আমরা করবো।”
ইউনিসেফ জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগ (ডিপিএইচই) এবং ওয়াশ খাতের সহযোগীদের সঙ্গে কক্সবাজার জেলার দুটি উপজেলায় ক্যাম্পগুলোতে শরণার্থীদের জন্য দ্রুততম সময়ে ল্যাট্রিন নির্মাণের অন্য একটি প্রকল্পও বাস্তবায়ন করছে।
এদিকে, স্বাস্থ্য খাতের অংশীদারদের সঙ্গে ১০ অক্টোবর থেকে ইউনিসেফ কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় মুখে-খাওয়ানো কলেরা টিকা ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। রোহিঙ্গা ও স্বাগতিক জনগোষ্ঠীকে কলেরার প্রকোপ থেকে রক্ষা করার জন্য ইউনিসেফ ৯০০,০০০ টিকা সরবরাহ করেছে।
Comments