শীর্ষ খবর

রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন চালানোর প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গত বছরের শেষ দিকের এসব ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে অভিযানের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন চালানোর প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। গত বছরের শেষ দিকের এসব ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

গত বছর ৯ অক্টোবর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মংডু জেলার অন্তত নয়টি গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড পুলিশ রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, দলগত ধর্ষণ নির্মমভাবে শারীরিক তল্লাশি ও যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।

এসব ঘটনার শিকার ও সাক্ষীরা জানিয়েছেন সরকারি বাহিনীর সদস্যরা দলবদ্ধভাবে হামলা চালিয়েছেন। তারা বন্দুকের ভয় দেখিয়ে ও আটকে রেখে রোহিঙ্গা মেয়েদের ধর্ষণ করে।

নির্যাতনের শিকার অনেকেই বলেছেন, জাত ও ধর্মের কারণে তাদের অপমান ও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এইচআরডব্লিউ এর একজন জ্যেষ্ঠ গবেষক প্রিয়াঙ্কা মোটাপার্থি বলেন, “রোহিঙ্গা নারী ও মেয়েদের ওপর হামলা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দীর্ঘদিনের যৌন নির্যাতনের ঘৃণ্য ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করেছে।”

রিপোর্টে বলা হয়েছে, “এসব ঘটনা বন্ধে ব্যর্থতা ও জড়িতদের বিচারে ক্ষমতা অনুযায়ী সবরকম ব্যবস্থা না নিয়ে থাকলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কমান্ডারদের দোষী সাব্যস্ত করা উচিত।”

গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে এইচআরডব্লিউ-এর গবেষকরা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ১৮ নারী ও ১০ পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জনই যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও ১৭ জন নারী ও পুরুষ বলেছেন, তাদের স্ত্রী, বোন বা মেয়েদের ওপর যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের গবেষণার ২৮টি ঘটনায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা গত ৩ ফেব্রুয়ারি ১০১ জন রোহিঙ্গা নারীর ওপর জরিপ চালিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারা বলেছে, সাক্ষাৎকার নেওয়া অর্ধেকের বেশি নারী জানিয়েছেন হয় তাদের ধর্ষণ করা হয়েছে বা অন্য যেকোনো ভাবে যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে।

মোট ২০৪ জনের সঙ্গে কথা বলার পর তারা এই সিদ্ধান্তে এসেছে, “রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা ছিলো ব্যাপক বিস্তৃত ও পরিকল্পিত যা মানবতাবিরোধী অপরাধের খুব কাছাকাছি পর্যায়ে পড়ে।”

গত বছর ৯ অক্টোবর সীমান্তে পুলিশ পোস্টে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলার পর উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে ধারাবাহিকভাবে “ক্লিয়ারেন্স অপারেশন্স” শুরু করে সেনাবাহিনী।

তারা নির্বিচারে নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা, লুটপাট ও অন্তত দেড় হাজার ঘরবাড়ি জালিয়ে দেন।

এ সময়ের মধ্যে ৬৯ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ও আরও প্রায় ২৩ হাজার জন মংডু জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাস্তুচ্যুত হয়ে রয়েছেন।

Click here to read the English version of this news

Comments