শয়ের নিচে শেষ কবে অলআউট?
দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে উড়তে থাকা বাংলাদেশ গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। গেল এক বছর ধরে ওয়ানডের মতন টেস্টেও খেলছিল বুক চিতিয়ে। বদলে যাওয়া এই দল ১০০ রানের নিচে গুটিয়ে যেতে পারে কেই বা ভেবেছিল। সাদা পোশাকে তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়ার আগেই বাংলাদেশ শেষ কবে অল আউট হয়েছিল তা মনেও করতে পারছেন না অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার মনে না থাকারই কথা। বিব্রতকর শেষ স্মৃতি যে পাক্কা দশ বছর আগে।
সোমবার পচেফস্ট্রম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯০ রানে অলআউট হয়ে ৩৩৩ রানে ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৪৪ রান করা মুশফিক দ্বিতীয় ইনিংসে করতে পারেন মাত্র ১৬ রান। দলের এতটাই বেহাল দশা যে ওটাই ওই ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
ম্যাচ শেষের পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে মুশফিক বললেন, ‘আমি ঠিক মনে করতে পারছি না সর্বশেষ কবে আমরা ১০০ রানের নিচে অলআউট হয়েছি। আশা করছি পরের ম্যাচে ভালো ক্রিকেট খেলবো। তবে এই ম্যাচেও ভালো খেলার সুযোগ ছিল’
২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে কলম্বো টেস্টে ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এখনো পর্যন্ত টেস্টে ওটাই বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। মনে না থাকলেও সে ম্যাচে খেলেছিলেন তখনকার তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এখন টেস্ট দলের নেতা তিনি। হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার পরও মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকার কথা জানাতে হলো তাকে, ‘আশা করি আমরা পরের ম্যাচে ভালো করবো। পেশাদার হিসেবে আমাদের মানসিক ভাবে কঠিন দৃঢ় হতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই নিয়ে ১১টি টেস্ট খেলল টাইগাররা। হার নয়টিতেই। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসে দুই টেস্টই ড্র করে ফেরে প্রোটিয়ারা। সেবার পুরো সিরিজ জুড়েই ছিলো বৃষ্টির দাপট। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে আগের চার টেস্টের সবকটাতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে কোনোবারই অলআউট হয়নি ১০০ রানের নিচে। ভালো দল নিয়ে এবারই পড়তে হলো বিব্রতিকর পরিস্থিতিতে। এমন ফলে মুশফিক অবশ্য দোষ দিচ্ছেন বোলারদেরও, ‘আমাদের বোলাররা প্রথম ইনিংসে ভালো করতে পারেনি। এটা ফ্ল্যাট ট্র্যাক ছিল কিন্তু আমরা ভালো জায়গায় বল করতে পারিনি।’
পচেফস্ট্রমে সিরিজের প্রথম টেস্টে ব্যাটিং বান্ধব পিচেও টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন মুশফিক। মওকা পেয়ে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেটে ৪৯৬ রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে ডু প্লেসির দল। নিজেরা ব্যাট করতে নেমে ফলোঅন এড়াতে পারলেও ৩২০ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশ। ১৭৬ রানে এগিয়ে থাকা স্বাগতিকরা দ্বিতীয় ইনিংসে যোগ করে আরও ২৪৭ রান। ৪২৪ রানের হিমালয় স্পর্শ করে জিততে হলে গড়তে হতো বিশ্বরেকর্ড। বাংলাদেশ সে পথে হাঁটেওনি। উইকেটে টিকে থেকে ড্র করা যেত। তালগোল পাকানো ব্যাটিংয়ে হয়নি তাও। উল্টো ফিরে এল দশ বছর আগের লজ্জা।
Comments