সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর জন্য আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে দেশে ইন্টারনেট নজরদারির যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। ধর্মীয় উগ্রবাদীরা ইন্টারনেটে তাদের মতাদর্শ প্রচার ও যোগাযোগ করছে এমন উদ্বেগের মধ্যেই নজরদারির ব্যবস্থা নিতে চলেছে সরকার।

দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর জন্য আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে দেশে ইন্টারনেট নজরদারির যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হবে। ধর্মীয় উগ্রবাদীরা ইন্টারনেটে তাদের মতাদর্শ প্রচার ও যোগাযোগ করছে এমন ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যেই এমন ব্যবস্থা নিতে চলেছে সরকার। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় এটি সহায়তা করবে বলেও মনে করা হচ্ছে।

নজরদারির পাশাপাশি এসব যন্ত্রপাতির মাধ্যমে সাইবার ঝুঁকি, অপরাধ দমন ও পর্নোগ্রাফির ওপর নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন সহজ হবে। এর ফলে ইন্টারনেটে মানুষের গতিবিধির ওপরও সার্বক্ষণিক নজর রাখতে পারবে আইন প্রয়োগকারীরা।

গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘সাইবার থ্রেট ডিটেকশন ও রেসপন্স’ শিরোনামে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় ১৫০ কোটি টাকা দিয়ে ইন্টারনেট নজরদারির যন্ত্র ‘ডিপ প্যাকেট ইন্সপেকশন’ (ডিপিআই) মেশিন দিয়ে সাইবার ঝুঁকি মোকাবেলা করতে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হবে।

অপরাধমূলক কার্যক্রম নজরদারির পাশাপাশি এর মাধ্যমে জনসাধারণের অনলাইন কার্যক্রমের ওপর নজরদারি এমনকি নিয়ন্ত্রণ করারও ব্যাপক ক্ষমতা পেয়ে যাবে আইন প্রয়োগকারীরা। একজন বিশেষজ্ঞ জানান, এর অপব্যবহারের মাধ্যমে নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনেরও আশঙ্কা রয়েছে।

মোট ৩৫টি ডিপিআই মেশিন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে সরকার। এই মেশিনগুলোর মধ্যে চারটি হবে অত্যন্ত শক্তিশালী।

একটি নির্দিষ্ট ইন্সপেকশন পয়েন্ট দিয়ে ডাটা প্যাকেট পার হওয়ার সময় এই ডিপিআই মেশিনগুলো ডেটা পরীক্ষা ও এর মধ্য থেকে বিশেষ তথ্য ছেঁকে বের করতে পারে। এর সাহায্যে মানুষের ইন্টারনেট ব্রাউজিং, মেসেজিং ও কনটেন্ট ডাউনলোডের ওপর নজর রাখতে পারবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র খোলা হবে। এখান থেকে পুরো ব্যবস্থাটি পরিচালনা ও সরকারের নির্দেশ মত কাজ পরিচালনা করা হবে।

আন্তর্জাতিক সব গেটওয়ে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এবং একটি দল সেখান থেকে সার্বক্ষণিক অনলাইন ট্রাফিকের ওপর নজর রাখবেন। প্রকল্পের নথি বলছে, এই ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহারকারীদেরও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রিপোর্টারদের বলেন, প্রকল্পের আওতায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় ও দক্ষ লোকবল তৈরিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।

Click here to read the English version of this news

Comments