প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১০ দ্বীপদেশের সঙ্গে চীনের নিরাপত্তা চুক্তি হয়নি

অনেক জল্পনার যবনিকা দেখা গেল ফিজির রাজধানী সুভায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপদেশটিতে এক বহুল আলোচিত বৈঠকে চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন সে অঞ্চলের ১০ দ্বীপদেশের প্রতিনিধিরা। মহাপ্রাচীরের দেশটি প্রত্যাশা করেছিল তার বিস্তার পূর্ব চীন সাগর থেকে বিস্তৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়বে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও।
ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ফাইল ছবি: রয়টার্স

অনেক জল্পনার যবনিকা দেখা গেল ফিজির রাজধানী সুভায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপদেশটিতে এক বহুল আলোচিত বৈঠকে চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন সে অঞ্চলের ১০ দ্বীপদেশের প্রতিনিধিরা। মহাপ্রাচীরের দেশটি প্রত্যাশা করেছিল তার বিস্তার পূর্ব চীন সাগর থেকে বিস্তৃত হয়ে ছড়িয়ে পড়বে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও।

কিন্তু, বেইজিংয়ের সেই প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি সুভার ভার্চুয়াল বৈঠকে।

আজ সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১০ দ্বীপদেশের সঙ্গে চীনের ভার্চুয়াল বৈঠকে নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে কোনো ঐক্যমত হয়নি।

ইউক্রেনে পরাশক্তি রাশিয়ার চলমান আগ্রাসন ও পূর্ব চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে যখন বৈশ্বিক উত্তেজনা চরমে, তখন প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১০ দ্বীপদেশকে নিয়ে চীনের বৈঠকে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের মধ্যে।

আজ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ ফিজিতে বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা ১০ দ্বীপদেশের ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি'র বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট লিখিত বক্তব্যে বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট যতই বদলে যাক না কেন, চীন সবসময়ই প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপদেশগুলোর ভালো বন্ধু।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীন সম্মেলনের জন্য খসড়া প্রস্তাব তৈরির পাশাপাশি ৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা করেছিল। এতে অংশ নেওয়ার জন্য সামোয়া, টোঙ্গা, কিরিবাতি, পাপুয়া নিউ গিনি, ভানুয়াতু, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, নিউই ও ভানুয়াতু দ্বীপদেশগুলোকে আহ্বান জানানো হয়েছিল।

প্রস্তাবে উল্লেখিত দ্বীপদেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা চুক্তি করতে চীনের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছিল।

চীনের এমন প্রস্তাবের বিষয়টি বৈঠকের আগে ফাঁস হওয়ার পর অন্তত একটি দেশ এর বিরোধিতা করেছিল বলেও রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

প্রতিবেদন মতে, বৈঠকে অংশ নেওয়া আরও কয়েকটি দেশ এই খসড়া প্রস্তাবে আপত্তি বা সংশোধনীর প্রস্তাব দিয়েছিল।

এতে আরও বলা হয়—সম্প্রতি, চীনের সঙ্গে কয়েকটি দ্বীপদেশ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়ে চুক্তি করেছে। চীন তা আঞ্চলিক পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।

যেমন, চীনের অর্থায়নে দ্বীপদেশ সামোয়া পুলিশ প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি করার চুক্তি করেছে। সেখানে আঙুলের ছাপের জন্য ল্যাবরেটরি নির্মাণের কথা রয়েছে।

কিরিবিতি'র এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তার দেশ নিরাপত্তা চুক্তিতে আগ্রহী নয়। তারা মূলত অর্থনৈতিক সম্পর্কের ওপর জোর দিতে চায়।

বৈঠক শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার ২ দিনের সফরে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ টোঙ্গায় যাবেন। তার সফরসূচির বিস্তারিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।

গত সপ্তাহে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী হোনিয়ারায় চীনের পররাষ্ট্রমস্ত্রী ওয়াং ই বলেছিলেন, সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে চীনের যে সম্পর্ক তা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশগুলোর জন্য একটি আদর্শ উদাহরণ হতে পারে। এই চুক্তির সমালোচকদের নিন্দাও করেন তিনি।

গত মাসে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে চীনের সই করা নিরাপত্তা চুক্তিতে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। তাদের আশঙ্কা, এই চুক্তির আঞ্চলিক প্রভাব অনেক। এই চুক্তির ফলে চীনের সামরিক বাহিনী অস্ট্রেলিয়ার অনেক কাছে চলে এসেছে।

 

Comments