অবশেষে কানাডায় ফিরছেন সেই তরুণী
বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মা-বাবার হেফাজতে থাকা কানাডীয় তরুণীকে কানাডায় ফিরে যেতে দেশটির সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছেন হাইকোর্ট। অভিযোগ ছিল মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ঢাকায় ১০ মাস ধরে আটকে রেখেছিলেন তার বাবা-মা।
আজ রোববার হাইকোর্টের নির্দেশে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রাব্বানী টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ১৯ বছর বয়সী ওই তরুণীকে কানাডা হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করেন।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, হাইকোর্ট কানাডা হাইকমিশনকে তাকে কানাডায় পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তার বসবাস ও পড়াশোনার খরচ বহন করতে বলেছে।
তরুণীর বাবা-মায়ের আইনজীবী মো. ওজি উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কানাডায় ফিরে না যাওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটি ঢাকায় কানাডা হাইকমিশনের হেফাজতে থাকবে।
তিনি বলেন, তার বাবা-মা, যারা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক, তারা সে দেশের আইন অনুযায়ী কানাডায় তাদের মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
রিট পিটিশনের শুনানির সময় আগের নির্দেশনা অনুসারে মেয়ে ও তার বাবা বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হন।
আজ রিট আবেদনের শুনানি চলাকালে আদালত কক্ষে হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তার বাবাও তাকে কানাডায় ফিরে যেতে সম্মতি দিয়েছেন।
নির্দেশনা দেওয়ার পর হাইকোর্ট বেঞ্চ আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।
মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসকে) দায়ের করা রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেডআই খান পান্না এবং সারা হোসেন।
গত ১২ এপ্রিল, হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছিল কানাডিয়ান মেয়েটি দেশে ফিরে গেলে কানাডিয়ান সরকারকে অবশ্যই তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
রিট আবেদনের শুনানিতে বেঞ্চ বলে, কানাডিয়ান নাগরিককে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা যাবে না কারণ তিনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং কানাডায় ফিরে যেতে চান।
মেয়েটিকে মুক্তি দিতে এবং তাকে কানাডায় যাওয়ার অনুমতি দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনের অনুরোধে আসক এবং ব্লাস্টের পক্ষ থেকে রিট আবেদন করা হয়।
পিটিশনকারীদের আইনজীবী জেড আই খান পান্না এর আগে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন যে মেয়েটির বাবা-মা মেয়েকে তার দাদা-দাদির সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। মেয়েটি কানাডায় ফিরে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু তাদের বাবা-মা তাকে ঘরে বন্দী করে রাখে এমনকি তারা তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
তিনি বলেছিলেন যে মেয়েটি কানাডিয়ান হাইকমিশন এবং একটি মানবাধিকার সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে এবং রিট পিটিশনকারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশের জন্য হাইকোর্টে একটি পিটিশন পাঠানোর অনুরোধ জানায়।
Comments