আবারও পুলিশ হেফাজতে ‘মৃত্যু’

রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের হেফাজতে লিটন (৪০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছেন, লিটন আত্মহত্যা করেছেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারের পরে পুলিশ তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছিল। লিটনের বাড়ি বগুড়ার কাহালু থানা এলাকায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম বলেন, লিটন নামে ওই ব্যক্তি মাদকাসক্ত ছিলেন। লক-আপের ভেতরে কম্বল ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, লক-আপের ভেতরে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এই ঘটনা তদন্তে একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সেই সুপারিশও করবে কমিটি।
'একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করবেন। মরদেহ টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে' বলেন উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম।
তবে, টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার পারভেজ জানান, তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।
লিটনের ছেলে মো. ওহেদুল ইসলাম (১৮) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাবা বগুড়ায় আগে ট্রাক চালাতেন। গত তিন-চার মাস আগে ট্রাক চালানোর জন্য নারায়ণগঞ্জ যান। সেখানে মুক্তারপুর কাঠপট্টি এলাকায় একটা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। আমরা তিন-ভাই বোন বাড়িতে থাকতাম।'
'তিন-চার দিন আগে ট্রাকের মালিক আমাদের জানিয়েছিলেন যে আমার বাবাকে উত্তরা থানার পুলিশ নাকি ধরেছে । দুই দিন আগে ওখান থেকে একজন উকিল আমাদের ফোন করে বলেছিল ছয় হাজার টাকা দিতে। টাকা দিলে আমার বাবাকে নাকি রিমান্ডে যেতে হবে না। কিন্তু, আমাদের কাছে টাকা ছিল না। তাই, আমরা দিতে পারিনি,' বলেন তিনি।
তিনি জানান, আজ সকালে উত্তরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের ফোন করে গাড়ি ভাড়া করে লিটনকে দেখতে যেতে বলেন।
'তিনি নাকি অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা সেখানে গেলে গাড়ি ভাড়া ওসি দিবেন বলেছেন। বাবা মারা গেছেন এই কথা ওসি বলেন নি। পরে, আজ দুপুর ১২টার সময় কাহালু থানা থেকে জানানো হয়েছে যে বাবা মারা গেছেন,' বলেন ওহেদুল।
জানতে চাইলে বগুড়া কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আম্বার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কাছে লিটনের পূর্বের কোন ইতিহাস নেই। এই থানায় তার নাম কোন মামলাও নেই।'
Comments