পুলিশ আমার কাছে খুনিদের নাম জানতে চায়: অংকনের বাবা

ছুরিকাহত হয়ে ৪৩ দিন পর হাসপাতালে মারা যাওয়া মুন্সিগঞ্জে স্কুলশিক্ষার্থী অংকন দত্তের হত্যাকারীদের এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। সন্তানের হত্যাকারীদের ব্যাপারে বাবা নির্মল দত্ত বলছেন, পুলিশ আমার কাছে খুনিদের নাম জানতে চাইছে। আমাকে যদি খুনিদের খুঁজে বের করতে হয় তাহলে পুলিশ কী করে?
অংকন দত্ত মুন্সিগঞ্জ শহরের কে কে গভ. ইনস্টিটিউট স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। শহরের রনছ পাড়ুলপাড়া এলাকায় তাদের বাড়ি। দুর্বৃত্তরা গত ৭ এপ্রিল তাকে ছুরিকাঘাত করে স্কুলের পাশে ফেলে যায়। ৪৩ দিন পর ১৯ মে ভোরে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সে মারা যায়।
এই ঘটনায় অংকনের কাকা প্রবীর দত্ত অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন অংকনের সহপাঠী, প্রতিবেশী ও স্বজনরা। শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন।

অংকনের বাবা নির্মল দত্ত অভিযোগ করে বলেন, 'পুলিশ একজনকেও শনাক্ত করতে পারেনি। তারা আমার কাছে খুনিদের নাম জানতে চায়। আমি নাম জানলে কি আর না বলি? আমি সন্তান হারিয়েছি, আমার আর ভয় কিসের? খুনিদের যদি আমার খুঁজে বের করতে হয়, তাহলে পুলিশ প্রশাসন কী করবে? পুলিশ চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের ধরতে পারে।'
তিনি বলেন, 'পুলিশ হয়ত জিম্মি হয়ে গেছে। হয়ত বড় বড় লোক বা টাকার কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। একটা কিছু তো হবে। আমার বলতে কোনো দ্বিধা নেই। দেড় মাস হয়ে গেল পুলিশ কোনো আশার খবর দিতে পারেনি। আমার ধারণা, তার সহপাঠীরা হত্যায় জড়িত।'
'হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার ছেলে বলেছিল, মুখে কাপড় ধরে অজ্ঞান করে নিয়ে গিয়েছিল। তারপর ছুরিকাঘাত করে স্কুলের পাশে ফেলে যায়। আমার ছেলে হাসপাতালে বলেছিল যেন তার সহপাঠীদের কাউকে হয়রানি না করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার সন্তান আসামিদের নাম বলে যায়নি। আমি কীভাবে নাম বলব?'
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ-উল-ইসলাম বলেন, অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। কোনো অবহেলা করা হচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, কিন্তু পারিনি। এখানে অন্য কারণ নেই। আসামি দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।
Comments