ভুয়া পরোয়ানায় ৪ দিন কারাবাস!

আব্দুর রাশিদ। ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় চার দিন কারাগারে থেকেছেন আব্দুর রাশিদ নামে ৬৫ বছর বয়সী এক কৃষক। পাঁচ সন্তানের জনক ওই কৃষক নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার তারাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ ধরনের মামলার (হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত) কোনো নথি না থাকার বিষয়টি প্রমাণ হওয়ার পর আজ সোমবার দুপুরে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপু এ তথ্য জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ওই আইনজীবী জানান, গত ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ আব্দুর রাশিদের বাড়িতে হাজির হন মনোহরদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক। সেসময় কৃষক আব্দুর রাশিদের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম কোর্ট) সাজার পরোয়ানা থাকার দাবি করে তাকে গ্রেপ্তার করতে যান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

পুলিশ কর্মকর্তার এমন দাবির কথা শুনে আব্দুর রাশিদ হতভম্ব হয়ে পড়েন। সেসময় পরিবারের সদস্যরা বৃদ্ধের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকা এবং সাজার পরোয়ানার ঘটনাটি আরও নিশ্চিত হতে সময় দেওয়ার অনুরোধ করলেও সে সুযোগ দেননি পুলিশ কর্মকর্তা। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে নরসিংদী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

শুক্র ও শনিবার আদালত বন্ধ থাকায় রোববার রাশিদের স্বজনেরা জেলার আইনজীবীদের পরামর্শে ঢাকার সিএমএম কোর্টের আইনজীবী আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপুর মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নথি সিএমএম কোর্টে দাখিল করেন। সেসময় আদালতে এ ধরনের মামলার নথি না থাকা ও ওই পরোয়ানা ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে আজ দুপুরে মুক্তি পান আব্দুর রাশিদ।

ভুক্তভোগী আব্দুর রাশিদের ছেলে জহিরুল ইসলাম বলেন, 'আমার বাবার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তিনি একজন নিরীহ মানুষ। পুলিশ যাচাই-বাছাই না করে ভুয়া পরোয়ানা আমলে নিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করার পর তিনি চারদিন কারাগারে ছিলেন।'

'জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন প্রতারণার মাধ্যমে আমার বাবাকে হয়রানি করেছে। আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করে এই ঘটনার বিচার দাবি করছি', বলেন তিনি।

আইনজীবী আবু সাইদ সিদ্দিকী টিপু জানান, যে স্মারক নম্বরে আব্দুর রাশিদের বিরুদ্ধে সাজানো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, সংশ্লিষ্ট আদালতে সেটির খোঁজ করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। কেউ পরোয়ানার কাগজপত্র বা অন্যান্য তথ্য কারসাজি বা জালিয়াতি করে হয়তো এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আব্দুর রাশিদ আজ দুপুরে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তবে, ভুয়া পরোয়ানায় গ্রেপ্তার বিষয়ে আমি কোনোকিছু জানি না।'

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হাজির করা পুলিশের কাজ। তবে, এক্ষেত্রে কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh lost over Tk 226,000cr for tax evasion: CPD

CPD estimated that around 50 percent of this amount has been lost to corporate tax evasion.

3h ago