শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন: সেই মানবাধিকার নেত্রী গ্রেপ্তার

স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

বান্দরবানে নয় বছরের শিশুকে জ্বলন্ত কয়েল দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে সেই মানবাধিকার নেত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বান্দরবান সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মো. সোহাগ রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সকালে শিশু নির্যাতনের অভিযোগের মামলায় মানবাধিকার নেত্রী ও আইনজীবী সারাহ সুদীপা ইউনুছকে বান্দরবান পৌরসভার বনরুপা পাড়া এলাকার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'
মামলার অপর আসামি সারাহ সুদীপার স্বামী ফয়সাল আহম্মেদ পলাতক রয়েছেন বলে জানান তিনি।
মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছিল, বান্দরবান পৌরসভার বনরুপা পাড়া এলাকার সারাহ সুদীপা ইউনুছ এবং তার স্বামী ফয়সাল আহম্মেদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ১৯ জুলাই সকালে তাদের বাসা থেকে নয় বছরের শিশুটি পালিয়ে যায়।
গত বুধবার শিশুটির সঙ্গে কথা বলেরে দ্য ডেইলি স্টার। সে অভিযোগ করে, 'সুদীপা ম্যাডাম আমাকে জ্বলন্ত মশার কয়েল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছ্যাঁকা দিয়েছে। ওনার স্বামীর খাবার তাড়াতাড়ি বানাইনি বলে ম্যাডাম বলেছে, আমাকে বাড়ির দোতলা থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলবে।'
একইদিনে অভিযুক্ত সারাহ সুদীপা ইউনুসের সঙ্গেও যোগাযোগ করে দ্য ডেইলি স্টার। তখন তিনি নিজেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একজন প্যানেল আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দেন। তারা দুজনই পেশায় আইনজীবী বলেও জানান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, সারাহ সুদীপা শিশুটিকে জ্বলন্ত কয়েল দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়। রান্নাঘর ধোয়ামোছার কাজ কেন ধীরে করছে অভিযোগে শিশুটির পিঠে ঝাড়ু দিয়ে আঘাত করে জখম করেন।
শিশুটি তাদের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। তবে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের পরিবর্তে শিশু আইনের ২০১৩-এর ৭০/৮০ (১) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
মামলার বাদী রওশন আরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি গরিব মানুষ। পড়ালেখা জানি না, আমার কাছ থেকে পুলিশ স্বাক্ষর নিয়েছে। মামলার কাগজে কী লিখেছে আমি কিছুই জানি না।'
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, 'যেহেতু জ্বলন্ত মশার কয়েল দিয়ে শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগ মামলায় উল্লেখ আছে, সেহেতু মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হওয়াটা যুক্তিযুক্ত ছিল।'
'তবে তদন্তকারী কর্মকর্তার এখনও সুযোগ আছে তদন্ত শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করার,' বলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময়।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার জেরিন আক্তার বলেন, 'তদন্ত সাপেক্ষ যদি কোনো কিছু যোগ করতে হয় যোগ হবে।'
 

Comments

The Daily Star  | English

The life cycles of household brands

For many, these products are inseparable from personal memory

12h ago